সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপাতত যুদ্ধবিরতি চলছে গাজায়। কিন্তু এরপর কী হবে মধ্যপ্রাচ্যের এই ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ? ফের কি পুরোদমে লড়াই শুরু হবে হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে? উঠছে এমনই নানা প্রশ্ন। কিন্তু এর মাঝেই নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঙ্কার, “আমরা গাজা দখল করবই।” আর এই হুঁশিয়ারি তিনি দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়েই। ফলে নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে ঘনাচ্ছে ভয়ংকর যুদ্ধের মেঘ।
এখন হামাসের ডেরা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন ইজরায়েলের পণবন্দিরা। তেল আভিভও মুক্তি দিচ্ছে প্যালেস্তিনীয় জেলবন্দিদের। তবে চাপানউতোর জারি রয়েছে দুপক্ষের মধ্যে। চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে একে অপরের দিকে আঙুল তুলছে তারা। এই পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহে আমেরিকায় পা রাখেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে তিনি বৈঠকে বসেন ট্রাম্পের সঙ্গে। দীর্ঘ আলোচনার পর বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুই রাষ্ট্রনেতা। এএনআই সূত্রে খবর, নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়েই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, “আমেরিকা গাজার দখল নেবেই। প্যালেস্তিনীয়দের অন্যত্র পুনর্বাসিত করার পরে আমরা গাজার উন্নতি করব, সংস্কার করব। গাজায় যে বোমা, বিস্ফোরক রয়েছে সেগুলো সব ধ্বংস করব। এরপর সেখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আর্থিক উন্নয়ন ঘটাব। মানুষের মাথার ছাদ তৈরি করব। আমরা গাজা জয় করবই।”
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হন নেতানিয়াহুও। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা গাজার ইতিহাস বদলে দিতে পারে। তিনি গাজার অন্য ভবিষ্যৎ তৈরি করবেন।” পাশাপাশি ট্রাম্পেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে প্রথম রাষ্ট্রনেতা হিসাবে আমার সঙ্গে বৈঠক করেছে। এটাই প্রমাণ আমেরিকা ও ইজরায়েলের বন্ধুত্ব কতটা মজবুত।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে ইজরায়েল। এই লড়াইয়ে প্রথম থেকেই তেল আভিভের পাশে রয়েছে আমেরিকা। কিন্তু গাজার মৃত্যুমিছিল নিয়েও সরব হয় হোয়াইট হাউস। এরপর রাফায় ইজরায়েলি ফৌজের অভিযান নিয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মন কষাকষি শুরু হয় নেতানিয়াহুর। ইহুদি দেশটিকে অস্ত্রের সরবরাহ স্থগিত করে দেয় মার্কিন প্রশাসন। এছাড়া গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাও করতে দেখা গিয়েছে ওয়াশিংটনকে। এখন আমেরিকায় দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেছেন ট্রাম্প। নির্বাচনে জেতার জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। পাশাপাশি দুদেশের মজবুত বন্ধুত্ব ও দৃঢ় সহযোগিতার আহ্বানও জানান তিনি।
ফলে এদিনে ট্রাম্পের ঘোষণায় জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। নতুন করে সমীকরণ তৈরি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প গাজা নিয়ে যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তা মোটেই ভালোভাবে নেবে না ইরান। গাজায় জেহাদের কোমর ভেঙে দখল নিয়ে নেওয়া মানে পরমাণু শক্তিধর তেহরানকেও বার্তা দেওয়া। কারণ হামাস, লেবাননের হেজবোল্লা, ইয়েমেনের হাউথিদের মদত দেওয়া, অস্ত্র জোগানোর অভিযোগ রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে। ফলে ইজরায়েলের ছায়ায় থেকে এবার সরাসরি যুদ্ধে নামতে পারে আমেরিকাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.