সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন আমেরিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ‘আমিই শান্তি ফেরাব।’ তবে এই শান্তির বিনিময়ে যথেষ্ট মূল্য চোকাতে হচ্ছে প্রাক্তন সোভিয়েত দেশটিকে। জানা যাচ্ছে, ইউক্রেনের পাশে থাকার বিনিময়ে দেশটির ৫০ শতাংশ খনিজ সম্পদ দাবি করেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের এই প্রস্তাব অনেকটা ‘নেপোর দই খেয়ে যাওয়া’র মতো। আমেরিকার এই প্রস্তাবে বেঁকে বসলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি।
গ্রাফাইট, লিথিয়াম ও ইউরেনিয়াম-সহ আরও নানান খনিজের ভাণ্ডার ইউক্রেন। আমেরিকার দাবি, ইউক্রেনের পাশে থাকার বিনিময়ে এইসব খনিজের ৫০ শতাংশ মালিকানা দিতে হবে তাদের। তবে ইউক্রেনের দাবি, ভবিষ্যতে যাতে কোনও যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না হয় সে দিকে নজর রেখে ইউক্রেনকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিতে হবে আমেরিকাকে। ইউক্রেনের অভিযোগ, খনিজ সম্পদের বিষয়ে জেলেনস্কি কিছুটা উদার মনোভাব দেখালেও, এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমেরিকা চুক্তিপত্রে কোনও গ্যারান্টি দেয়নি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকার ওই চুক্তিপত্র এখনও সম্পূর্ণ নয়। ফলে এতে সই করার প্রশ্নই ওঠে না। ওই চুক্তিপত্রে আরও সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, “আমেরিকা আমার দেশের খনিজ সম্পদে বিনিয়োগ করুক তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা যদি কিছু দিই, বিনিময়ে আমাদেরও কিছু পেতে হবে। আমরা অন্য কোনও দেশের খনিজ সম্পদের কেন্দ্র হতে চাই না।” প্রেসিডেন্ট আরও জানান, “আমি বিশ্বাস করি ওয়াশিংটন কিয়েভকে সমর্থন করে, তবে ট্রাম্পের থেকে আরও বেশি কিছু আশা রাখি আমরা।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যুদ্ধরত দুদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আলোচনার টেবিলে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তাই ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন সৌদি আরবকে। মরুদেশে বৈঠক করছেন আমেরিকা ও রাশিয়ার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। উপস্থিত রয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। কিন্তু যে দেশকে কেন্দ্র করে এই আলোচনা আশ্চর্যজনকভাবে সেই ইউক্রেনকেই ডাকা হয়নি সৌদিতে। এই ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, “ইউক্রেনকে ছাড়া ইউক্রেন সম্পর্কে কোনও আলোচনা বা চুক্তিকে আমরা স্বীকৃতি দিই না।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পালটা তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “জেলেনস্কি একজন ব্যর্থ নেতা। আলোচনা বা সমঝোতার পথে আসার কোনও ক্ষমতাই নেই তাঁর। তিন বছর পূর্ণ হতে চলল এই যুদ্ধের। জেলেনস্কিরই তো উচিত ছিল অনেক আগেই চুক্তি করে লড়াই বন্ধ করে দেওয়া।” তবে এহেন মন্তব্য ট্রাম্প প্রথমবার করলেন না। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, জেলেনস্কিরই সমঝোতার পথে হাঁটা উচিত। রাশিয়া যে অঞ্চলগুলো চাইছে সেগুলো তাদের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। তবে প্রথমে ডাক না পেলেও সূত্রের খবর, বুধবার সৌদিতে যেতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.