সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরমাণু চুক্তি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল ইরান-আমেরিকার মধ্যে। শোনা গিয়েছিল, ওয়াশিংটনের কাছে নাকি সুর নরম করেছে তেহরান। পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করার কথা দিয়েছে তারা। কিন্তু শর্ত ছিল‘ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্টে’ কোনও রকম বাধা দেওয়া যাবে না ইরানকে। এখানেই কি বিপদের কোনও আঁচ পেয়েছিল ইজরায়েল? তাই প্রথম থেকেই গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে ইসলামিক দেশটির পরমাণু কেন্দ্রে আঘাত হেনেছে তেল আভিভ?
আজ শুক্রবার সকালে থেকে ইরানে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইজরায়েলি সেনা। সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। অন্তত ২০০টি মিসাইল আছড়ে পড়ে। যার জেরে মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি এবং ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডারের। তেহরানের মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে এই হামলা কয়েকদিন চলবে বলে হুঙ্কার দিয়েছে ইজরায়েল। দু’দেশের মধ্যে এই সংঘাত বহুদিনের। ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই আগুনে আরও ঘি পড়ে। ইরানের বিরুদ্ধে হামাসকে অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ এনেছে ইজরায়েল। যা নিয়ে গত বছরের এপ্রিল মাসে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দু’দেশের মধ্য়ে। এরপর যুদ্ধের কালো মেঘ সরলেও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আশঙ্কা ছিল, আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা আসলে চোখে ধুলো দেওয়ার কৌশল ইরানের। আড়ালে পরমাণু হাতিয়ার বানাচ্ছে তারা। আজকের এই হামলা প্রসঙ্গে ইজরায়েল বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সম্প্রতি তাদের কাছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার রিপোর্ট হাতে আসে। যেখানে দাবি করা হয়, আড়ালে পরমাণু গবেষণার পাশাপাশি হাতিয়ার বানাচ্ছে ইরান। ‘ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্টে’বা সমৃদ্ধকরণ ছাড়াও পরমাণু বোমা ফেলার মতো অত্যাধুনিক মিসাইলও তৈরি করে ফেলেছে তারা। আর এতেই ইজরায়েলের আশঙ্কা, এই সমস্ত হাতিয়ার বা মিসাইল তেহরানের থেকে হাতে পাবে হামাস, হাউথিদের মতো সশস্ত্র সংগঠনগুলো। তাই বিপদ বুঝে পরমাণু পরিকাঠামোগুলোকে টার্গেট করা হয়।
কয়েকদিন আগেই প্রকাশ্যে আসে ইরানের ইসলামিক রেভেলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ‘মিসাইল সিটি’। যা আসলে তাদের তৃতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার। যা আরও চিন্তা বাড়ায় আমেরিকা আর ইজরায়েলের। এড়াছা বহুদিন ধরেই এই দুই ‘বন্ধু’ দেশের নিশানায় রয়েছে রেভেলিউশনারি গার্ডস। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলায় ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানির মৃত্যু হয়। যার পিছনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত ছিল বলেই অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.