সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দল বেঁধে তৈরি করছেন ‘কেঁচো সার’৷ চলছে মাচা করে সবজি চাষ৷ সেই সঙ্গে প্রাণীপালনও৷ স্বনির্ভরতার বার্তা নিয়ে গ্রামে-গ্রামে ঘুরে বেড়ানো নেত্রী এবার তৃণমূলের ভোট প্রার্থী৷ এবারের পঞ্চায়েত ভোটে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রীকে প্রার্থী করে কংগ্রেসের গড়ে থাবা বসাতে চাইছে তৃণমূল। নির্বাচনী এলাকা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বাঘমুণ্ডি ব্লকের ১৪ নম্বর আসন। ওই এলাকায় রয়েছে রাধারানি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। সেই গোষ্ঠীর নেত্রীই হলেন নমিতা সিং মুড়া। তাঁকেই পঞ্চায়েতের প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই মনোনয়ন পর্ব মিটতেই কাজে নেমে পড়েছেন নমিতাদেবী। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে নিয়েই দেওয়াল লিখতে শুরু করেছেন। ঘর থেকে বেরিয়ে রং-তুলি হাতে নিলেই মহিলারা তাঁর সামনে জড়ো হয়ে যাচ্ছেন। চলছে ঘাস ফুল এঁকে ভোট প্রচার। বাঘমুণ্ডির তুনতুড়ি গ্রামে তৃণমূলের মহিলারা যেন ভোট প্রচারে টেক্কা দিচ্ছেন পুরুষদের।
এই ব্লকের ১৪ ও ১৫ দুটি জেলা পরিষদই কংগ্রেসের দখলে। বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েত সমিতিও কংগ্রেস দখলে রেখেছে। আসলে এই এলাকা এখনও কংগ্রেসের গড়। বলা ভাল পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতোর ‘গড়’। তাই এবার একটি আসনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রীকে প্রার্থী করে চমকে দিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাতো বলেন, বাঘমুণ্ডির জেলা পরিষদের এই দুটি আসনই জয়লাভ করা তাদের অন্যতম লক্ষ্য। তাই সেভাবেই প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। পনেরো নম্বর আসনেও গোষ্ঠীর সংগঠককেই প্রার্থী করা হয়েছে। ওই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দলের ব্লক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশুতোষ মাহাতো।
তৃণমূল প্রার্থী তুনতুড়ি গ্রামের বাসিন্দা নমিতাদেবী এই এলাকারই বধূ। চাষাবাদ, পশুপালন করে স্বনির্ভর হয়ে তিনি নিজে পাকা বাড়ি বানিয়েছেন। তার দলের দশ সদস্যকে নিয়ে ওই এলাকার শালডাবরা গ্রামে কেঁচো সারের প্রকল্প চালু করেছেন। সবাই মিলে মাচা করে করছেন সবজি চাষও। গত আট বছর ধরে স্বনির্ভরতার বার্তা নিয়ে সারাদিন পাহাড়তলির গাঁয়ে-গাঁয়ে ছুটে বেড়ানো নেত্রী আজ ভোট প্রার্থনা করছেন। রাজনীতির এই ময়দানে প্রথম পা রাখলেও তাঁর কথাবার্তায় তা বোঝার উপায় নেই। তিনি বলেন, “এলাকার মানুষজন বললেন প্রার্থী হতে হবে। তাই হয়ে গেলাম। এখন একটা গোষ্ঠী সামলাই। জিতলে জন প্রতিনিধি হয়ে এলাকায় কাজ করব।” তাঁর গোষ্ঠী যে সংঘের অধীনে আছে, সেই সংঘেরই ব্যাংক লিঙ্কেজ কর্মচারী হিসাবে তিনি পাঁচ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। তাই জয়ের ব্যাপারে একেবারে আত্মবিশ্বাসী নমিতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.