ধীমান রায়, কাটোয়া: শাস্ত্রে এই বৃক্ষের সম্পর্কে খুব একটা বর্ণনা মেলে না। নিমগাছের ভেষজ গুণ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে নিমগাছকে কেন্দ্র করে কালীকার আরাধনার কথা খুব বেশি শোনা যায় না। কাটোয়া শহরে রয়েছে এমন এক কালীক্ষেত্র, যেখানে রয়েছে বহু প্রাচীন এক নিমগাছ। তার চারপাশে বেদি বাঁধানো হয়েছে। এই নিমগাছকেই কালী রূপে পুজো করা হয় কাটোয়ায়। ভক্তরা যাকে ‘ঝুপোকালী’ নামেই চেনেন। বর্গিবাহিনী বা ডাকাতদের হাতেই যে পুজো শুরু হয়েছিল। দেখতে দেখতে এই পুজোর বয়স হয়ে গেল ৩০০ বছর।
[যে রূপে বাংলায় পূজিতা কালী তা কার ভাবনায় তৈরি জানেন?]
কাটোয়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় কলেজপাড়ায় রয়েছে সেই পুরানো নিমগাছ। যা এখনও ভক্তিভরে দেবী জ্ঞানে পুজো করেন এলাকার বাসিন্দরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই এলাকা একসময় ঘন জঙ্গল ছিল। জঙ্গলে বর্গিরা ডেরা বেঁধেছিল। বর্গি ডেরার মধ্যে ছিল এই নিমগাছ। শোনা যায় নিমগাছের তলায় দস্যুরা কালী প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই কালীকে প্রণাম করে তবে বর্গীরা ডাকাতি করতে বের হত। অনেক কাল পরে ডাকাতদের এই ডেরা উচ্ছেদ হয়ে যায়। তবে রয়ে গিয়েছে সেই নিমগাছটি।
[কী রহস্য কালী মূর্তিতে? কেন মা নগ্নিকা?]
নিমগাছকেই শক্তির উৎস ভেবে পরবর্তীকালে পুজো শুরু করেন স্থানীয়রা। ঝুপোকালী নামে পরিচিত নিমগাছটি। ট্রাস্টি কমিটি তৈরি করে এখন ঝুপোকালীর পুজো হয়। এই কালীর মাহাত্ম্যের কথা দূরদূরান্তে প্রচারিত। পুজো কমিটির সম্পাদক সুব্রত চোধুরি জানিয়েছেন, ১৮০ জন সেবাইত রয়েছেন। বারোমাস পুজো হয়। বহু ভক্ত এখানে মানত করেন। মনোস্কামনা পূর্ণ হলে তারা পুজো দিয়ে যান। প্রতিবারের মতো এবারও কার্তিক অমাবস্যায় মহাপুজোর আয়োজন ঘিরে ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ দেখার মতো। ১৫–২০ হাজার লোকের ভোজের ব্যবস্থা থাকে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.