Advertisement
Advertisement

পরিবেশবান্ধব এগ্রি টেক্সটাইল ব্যাগেই দাগহীন কলা চাষে সাফল্য

নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনা।

This thing can help banana cultivators a lot
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 19, 2018 7:25 pm
  • Updated:September 19, 2018 7:25 pm

অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: পরিবেশবান্ধব এগ্রি টেক্সটাইলের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করে উন্নত মানের কলাচাষে রাজ্যে নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গা-১ নম্বর ও বারাসাত-১ নম্বর ব্লকের কলা চাষিরা। ওই ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে জেলা ও ব্লকের উদ্যান পালন দপ্তর। সহকারী উদ্যান পালন আধিকারিক শুভদীপ নাথ এগ্রি টেক্সটাইল প্রক্রিয়ায় ব্যাগ তৈরি ও ব্যবহার সম্পর্কে জানান, এই ব্যাগ উন্নত ধরণের পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ সম্পূর্ণ জীবাণু মুক্ত কৃষিজাত তন্তুর সাহায্যে তৈরি করা হয়। এটি বিজ্ঞান সম্মত। পুষ্ট কাঁদিতে একবার এই ব্যাগ পরিয়ে দিলে কলা নিরোগ ও দাগহীন হয়। ফলে বাজারে ভাল দাম মেলায় আর্থিকভাবে উপকৃত হন কৃষকরা।

[গোলমরিচ চাষ করে আয় বাড়াতে চান? জেনে নিন পদ্ধতি]

জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় উদ্যান পালন দপ্তরের সমন্বিত উদ্যান উন্নয়ন মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নতমানের কলা চাষের এলাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় দেশি সুস্বাদু বাগদা, কাঁঠালি কলার চাষ সুবিদিত। কিন্তু কলা পুষ্ট হওয়ার সময় হলে বিটেল পোকার আক্রমণে কলার গায়ে কালো দাগ পড়ে। তাছাড়া, কাঁদি খোলা আকাশের নিচে থাকায় বাঁদুর কলায় গায়ে বসে রস শুষে নেয়। ফলে কলার মান খারাপ হয়ে যায়। গায়ে নানা দাগ পড়ে। এমন দেখতে খারাপ ও রোগাক্রান্ত কলার বাজারে দাম পাওয়া যায় না। দেখা গিয়েছে নিরোগ ও দাগহীন আকর্ষণীয় হলুদ রঙের কলার বাজারে চাহিদা রয়েছে। নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কলা কিনে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পাকিয়ে বিপণন করছে। নিরোগ ও দাগহীন উন্নত গুণমানের জন্য কৃষকরাও কলার দামও তুলনামূলক বেশি পাচ্ছেন। আর এই উন্নত কলা পাওয়ার জন্য দরকার পরিবেশবান্ধব এগ্রি টেক্সটাইল ব্যাগের।

Advertisement

[আনারসের পর বাউ কুল চাষই নয়া দিশা উত্তরের কৃষকদের]

উন্নত মানের কলা চাষে কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগে বিশ্বের প্রথম সারিতে রয়েছে ইজরায়েল। সেখানে কলার কাঁদি পরিপুষ্ট হলেই পরিবেশ বান্ধব এগ্রি টেক্সটাইলের তৈরি ব্যাগ পরিয়ে কাঁদি ঢেকে দেওয়া হয়। আমাদের দেশে কলা চাষের উন্নত রাজ্যগুলির মধ্যে অগ্রণী মহারাষ্ট্র। এই ধরনের ব্যাগ ব্যাবহার করে টিস্যু কলার চাষে ব্যাপক ব্যাবসায়িক সাফল্য মিলেছে। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েই পশ্চিমবঙ্গেও উদ্যান পালন দপ্তর কলা চাষে আমূল পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় কলা চাষিদের প্রযুক্তি প্রয়োগের প্রশিক্ষণ মাঠে নেমে হাতে কলমে শেখাতে শুরু করেছেন সহকারী উদ্যান পালন অধিকর্তা শুভদীপ নাথ।

Advertisement

[ক্যানসার ঠেকাতে ড্রাগন ফ্রুট চাষে জোর কৃষি দপ্তরের]

তিনি জানান “পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ সম্পূর্ণ জীবাণু মুক্ত কৃষিজাত তন্তুর সাহায্যে তৈরি। এবং এটি বিজ্ঞান সম্মত।” তিনি আরও জানান মোচা কেটে নেওয়ার পর এই ব্যাগ কলার কাঁদির নিচের দিক থেকে পরিয়ে উপরের কাণ্ডের কাছে তুলে পাটের দড়ি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্ক্যারিং বিটেলের জন্য ব্যাগ পরানোর আগে একটি কীটনাশক পরানো যেতে পারে। তবে পরে আর কোনও কীটনাশকের দরকার নেই। এই পদ্ধতি প্রয়োগে কৃষকদের অভ্যাসগত কীটনাশকের ব্যবহার অনেকটাই কমে যায়। কলার মানও ভাল হয় এবং বাজারে বেশ ভাল দাম মেলে। উৎপাদন খরচও অনেকটাই কম হয়। উওর ২৪ পরগনা জেলার উপ-উদ্যান পালন অধিকর্তা হৃষিকেশ খাঁড়া এ সম্পর্কে জানান “কৃষি দপ্তরের আত্মা প্রকল্পের সহযোগিতায় এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে। আমডাঙ্গা ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েতের কিছু গ্রামের কলার খেতকে প্রদর্শনী ক্ষেত্র হিসাবে ধরে এই চাষে সাফল্য এসেছে। আগামী দিনে অন্যান্য ব্লকেও এই পদ্ধতিতে চাষকে ছড়িয়ে দিতে হবে।”

[থাইল্যান্ডের অর্কিড ফুটিয়েও হতে পারে লক্ষ্মীলাভ, জেনে নিন চাষের পদ্ধতি]

আমডাঙ্গা ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা ও আত্মা প্রকল্পের ব্লক টেকনোলজি ম্যানেজার জানান, এই ব্যাগ বিভিন্ন ফার্মা প্রডিউসার কোম্পানি সরাসরি চাষের মাঠে নিয়ে হাজির হচ্ছে। ফলে কৃষকরা মাঠে বসেই ব্যাগের প্রয়োগ ও উপকারিতা বুঝতে পারছেন। এ সম্পর্কে শুভদীপবাবু জানান, “বিশেষ ধরনের পরিবেশবান্ধব ওই ব্যাগ ব্যবহার করে কলা চাষের খরচ যেমন কম হচ্ছে তেমনই আবার পোকার উপদ্রব হ্রাস পাচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহার কম হওয়ায় কলার উপর বিষক্রিয়ার ক্ষতিকারক দিকটিও ক্রমশই কমে যাচ্ছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ