Advertisement
Advertisement

নির্বাচনী প্রচার শুরু হতেই আওয়ামি লিগ-বিএনপি সংঘর্ষ, নিহত ১

জেলায় জেলায় সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ৩০০ জন।

Awami League-BNP clash
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 11, 2018 7:50 pm
  • Updated:December 11, 2018 7:50 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগামী ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর দিনেই আজ, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে শাসকদল আওয়ামি লিগের সঙ্গে বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ। এতে একজন নিহত এবং অন্তত ৩০০ জন জখম হয়েছেন। হামলা হয়েছে নেতাদের কনভয়েও। এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। গত মাসের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসের দায়িত্ব নেওয়া মিলার মঙ্গলবার প্রথম নির্বাচন কমিশনে যান। বিকেলে সিইসি নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সবদল যেন বাধাহীনভাবে নির্বাচনী প্রচার, ব়্যালি, সমাবেশ করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

[নির্বাচন বানচাল করতে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠক বিএনপির!]

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্র কোন নির্দিষ্ট দল বা প্রার্থীকে সমর্থন করে না মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে এবং বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমর্থন করে। নোয়াখালিতে সংসদ নির্বাচন ঘিরে সংঘাতে শাসকদলের যুবলিগ নেতা খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার এওয়াজবালিয়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত হানিফ (২৪) ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলিগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে গুলি করে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে। এ সময় তাঁর কাকা নুরুল ইসলাম জখম হয়েছেন। এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া দুজন নেতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগিরের কনভয়ে হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা কনভয়ের সাতটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ বিএনপির। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দানারহাট এলাকার ঘটনা। মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। মঙ্গলবার নরসিংদী-২ (পলাশ ও সদরের একাংশ) আসনে নির্বাচনী প্রচারের বিএনপি প্রার্থী প্রাক্তন তথ্যমন্ত্রী ড. আবদুল মইন খানের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় যুবলিগ ও ছাত্রলিগ নেতা-কর্মীরা। তবে আওয়ামি লিগের দুটি নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার পালটা অভিযোগ করছেন স্থানীয় আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেলে আমদিয়া ইউনিয়নের বেলাব বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে সোমবার রাতে রাজশাহী-২ (সদর) এবং রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিএনপির নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও নৌকা প্রতীকে অগ্নিসংযোগে করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন বলেন, রাজশাহী-২ আসনের আওতাধীন চার নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। রাজশাহী নগরীতে বিএনপির ১৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Advertisement

[নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ আওয়ামি লিগ ও বিএনপির]

অপরদিকে, রাজশাহী-২ আসনে আওয়ামি লিগের নৌকা প্রতীকে আগুন দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সোমবার রাতে নগরীর ডাশমারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিএনপি-জামাতের কর্মীরা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর জামাত নেতা শাহাজান আলির কার্যালয়ের সামনে সোমবার রাতে মহাজোট প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা ফজলে হোসেন বাদশার সমর্থনে একটি নৌকা প্রতীক টাঙানো হয়। ওই রাতেই কে বা কারা তাতে অগ্নিসংযোগ করে। তবে আওয়ামি লিগের দুটি নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার পালটা অভিযোগ করছেন স্থানীয় দলের নেতা-কর্মীরা। প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে সাংবাদিকদের করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল। নোয়াখালির কবিরহাট উপজেলায় আওয়ামি লিগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এসময় নির্বাচনী অফিস ও কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার বৈকারিতে ধানের শীষ প্রতীকের বিপুল সংখ্যক পোস্টারে আগুন, কয়েকটি বাড়িতে হামলা ও দোকান ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলায় ইউনিয়ন যুবদলের এক নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।

[শ্বশুরবাড়ি নয়, পৈত্রিক ভিটে গোপালগঞ্জ থেকেই নির্বাচনে লড়বেন শেখ হাসিনা]

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলায় স্বাভাবিক প্রচারের ক্ষেত্রে পুলিশ বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব শ্যামল। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ দলীয় কর্মীর মতো কাজ করছে। আওয়ামি লিগকে নিরাপত্তা দিচ্ছে, আর বিএনপির কর্মীদের হটিয়ে দিচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফের প্রচার গাড়িতে হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ পশুহাট এলাকায় এ হামলা ঘটে। হামলায় শরিফুজ্জমানের দু’টি মাইক্রোবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলায় বিএনপির নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকাতেও বিএনপির প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবুর নির্বাচনী মিছিলে হামলা হয়েছে। জীবননগর উপজেলা শহরের চার রাস্তার মোড়ে এ হামলা হয়। বিএনপির মিছিলটিতে ছাত্রলিগ ও যুবলিগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় নেতৃত্ব।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ