Advertisement
Advertisement

Breaking News

নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আওয়ামি লিগের, লুপ্তপ্রায় বিএনপি

শেখ হাসিনা তাঁর নিজের কেন্দ্র গোপালগঞ্জ থেকে প্রদত্ত ভোটের প্রায় ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

Awami League sweeps poll in Bangladesh
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:December 31, 2018 8:43 am
  • Updated:December 31, 2018 8:43 am

কৃষ্ণকুমার দাস ও সুকুমার সরকার: পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও জামাতের যৌথ চক্রান্ত ভেস্তে দিয়ে সংসদে দু’তৃতীয়াংশেরও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে চতুর্থবারের জন্য বাংলাদেশে ক্ষমতায় ফিরলেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে হাসিনার দল আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৬৬ আসন। উলটো দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন খালেদা জিয়ার ঐক্যজোট পেয়েছে মাত্র ৬ আসন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেন মহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২ আসন।

শেখ হাসিনা তাঁর নিজের কেন্দ্র গোপালগঞ্জ থেকে প্রদত্ত ভোটের প্রায় ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জয়ী হয়েছেন বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও আওয়ামি লিগের মহাসচিব ওবায়েদুল কাদের, ক্রিকেটার মাশরফি, চিত্রনায়ক ফারুখ প্রমুখ তারকা-প্রার্থীরাও। দলের এই বিপুল জয়ের জন্য বাংলাদেশের সকল ভোটারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, মানুষ আরও বেশি দায়িত্ব দিল, তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে আরও বেশি করে উন্নয়নের কাজ করতে হবে। মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করা ‘ভারতবন্ধু’ শেখ হাসিনার জয়ে ব্যাপক খুশি দিল্লির সাউথ ব্লক। সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও। নির্বাচনী সংঘর্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে

Advertisement

বিরোধী একাধিক প্রার্থীর দুপুরেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো ও বুথ দখল-বিরোধী এজেন্টদের মারধরের অভিযোগ দিয়ে রবিবার বিকেলে শেষ হয় বাংলাদেশের একাদশ সংসদীয় নির্বাচন। ভোটগ্রহণ শেষ হতেই বুথে বুথে গণনা শুরু হয়। রাত আটটার পর থেকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে ফলাফল আসতে শুরু করে। প্রথমেই জয়ী ঘোষণা করা হয় প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে। রাত যত বেড়েছে ততই আওয়ামি লিগের তারকা প্রার্থীদের জয়ের খবর এসেছে। রংপুর কেন্দ্রে ফের জিতেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেন মহম্মদ এরশাদ। ভোটে ঢাকায় আসা ভারতীয় তিন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের আট সদস্য পৃথক সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন, “ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ। দেশ জুড়ে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে।”

Advertisement

দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে রবিবার ২৯৯ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। গাইবান্ধা সংসদীয় কেন্দ্রে প্রার্থীর মৃতু্যর জন্য ভোট হয়নি। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গোপালগঞ্জ কেন্দ্রে ১০৮ বুথের ভোটে হাসিনা ‘নৌকা’ প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৫২৯ ভোট। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৪। হাসিনার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-র এস এম জিলানি পেয়েছেন মাত্র ১২৩ ভোট।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ভোট পড়েছে ৯৯.৪৭% কারণ, কিছু ভোটার মারা না গেলে ইতিহাস গড়ে ১০০% মানুষ ভোট দিতেন বলে অনুমান। হাসিনার কেন্দ্রে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মারুফ শেখ ‘হাতপাখা’ প্রতীকে ৭১ ভোট, নির্দল প্রার্থী এনামুল হক ‘আপেল’ প্রতীকে ১০ ভোট এবং আরেক নির্দল প্রার্থী উজির ফকির ‘সিংহ’ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৪ ভোট। অন্য দিকে, বিরোধী দলের প্রার্থীর চেয়ে ৩৪ গুণ বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামি লিগের প্রার্থী ক্রিকেট তারকা মাশরফি। নড়াইল-২ আসনে ১৪০ বুথে মাশরাফি পেয়েছেন ২ লাখ ৭১ হাজার ২১০ ভোট। তঁার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এনপিপি দলের চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ পেয়েছেন মাত্র ৭ হাজার ৮৮৩ ভোট।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে এবার প্রথম স্বশাসিত নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে সেনার উপস্থিতিতে ভোট হল বাংলাদেশে। সকালে ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এরশাদ ভোট দিতে না গেলেও ঐক্যফ্রন্ট নেতা কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সকালে ভোট দিয়েছেন।

অশান্তি এড়াতে দেশজুড়ে ত্রিস্তরীয় অভূতপূর্ব নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন, নেমেছে সেনাও। ছিলেন দেশ-বিদেশের পর্যবেক্ষকরা। বন্ধ ছিল ৪জি, ৩ জি হাইস্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা। এমনকী, মোটরবাইক চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। কিন্তু, এতকিছুর পরেও নির্বাচনী অশান্তি, হিংসা-প্রাণহানি এড়ানো যায়নি। সন্ধ্যায় ভোট শেষ হতেই ঢাকায় বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলকে পাশে নিয়ে কামাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, “দেশের প্রায় সব আসন থেকেই একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছে। দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক। এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।”

তবে আওয়ামি লিগের মহাসচিব ওবায়েদুল কাদের বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “উৎসবের পরিবেশে বাংলাদেশে ভোট হয়েছে। মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে ভোটাররা শেখ হাসিনাকে দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছেন।”

[বিজেপিকে আটকাতে কেরলের বাম জোটে সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ