Advertisement
Advertisement

রিফিউজি ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের নির্বীজকরণের ভাবনা বাংলাদেশে

অথচ জন্মনিয়ন্ত্রণ ইসলাম-বিরুদ্ধ, এমনটাই মনে করেন রোহিঙ্গা মুসলিমরা।

Bangladesh mulls sterilization of Rohingya refuges
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 28, 2017 6:15 am
  • Updated:July 11, 2018 3:28 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারের রাখাইন থেকে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা রিফিউজি সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশে। উপচে পড়ছে শরণার্থী শিবিরগুলি। চারদিকে ঠাঁই নেই, ঠাঁই নেই দশা। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভিড়ে ঠাসা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘ভলেন্টিয়ারি স্টেরিলাইজেশন’ বা স্বেচ্ছায় নির্বীজকরণ অভিযান চালানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ সরকার। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এমনটাই খবর। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে প্রায় ১০ লক্ষ শরণার্থী মাথা গোঁজার জায়গাটুকুর জন্য তীব্র সংগ্রাম চালাচ্ছেন। অথচ প্রতিটি ক্যাম্পে প্রচার চালিয়েও জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সচেতনতা জন্মাচ্ছে না। তাই এবার সে দেশের সরকার স্বেচ্ছায় নির্বীজকরণ অভিযান চালাতে চাইছে।

[গুলি চালিয়ে ভারতের ড্রোন নামানোর দাবি পাক সেনার]

গত আগস্টে মায়ানমারে সেনা অভিযানের ফলে প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মুসলিম সংখ্যালঘুদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া কথা মুখে বললেও সু কি সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে রাষ্ট্রসংঘেও। ফলে বাংলাদেশে শরণার্থীদের ঢল থামার কোনও লক্ষণই নেই। খাদ্য নেই, উপযুক্ত শৌচাগার নেই, পোশাক নেই। অথচ সরকারি আধিকারিকরা বারবার সতর্ক করলেও জন্মনিয়ন্ত্রণেরও কোনও ভাবনায় দেখা যাচ্ছে না মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে, খবর সংবাদ সংস্থার। এরকম আরও কয়েক মাস চলতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বাংলাদেশ সরকারের।

Advertisement

কক্সবাজার কেন্দ্রীক এক রিফিউজি ক্যাম্পের ফ্যামিলি প্ল্যানিং সার্ভিসের প্রধান পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য বলছেন, ‘রোহিঙ্গাদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের কোনও পরিকল্পনা নেই। মায়ানমারে প্রাথমিক শিক্ষাটুকুও পাননি অনেকে। যার ফলে বহু পরিষেবা থেকেই তাঁরা বঞ্চিত হয়ে এসেছেন।’ পিন্টু কান্তি জানিয়েছেন, এক একজন রোহিঙ্গার একাধিক স্ত্রী রয়েছে। কারও কারও সন্তান সংখ্যা ১৯-এরও বেশি। ফলে ক্যাম্পে একটি ঘর বরাদ্দ করা যাচ্ছে না। দেখা দিচ্ছে খাদ্যের অভাব। পরিস্থিতি সামাল দিতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মাত্র ৫৪৯টি কন্ডোমের প্যাকেট বিলি করা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। কিন্তু সেটাও ব্যবহার করতে চান না অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম।

Advertisement

[‘পাকিস্তান না পারলে বলুক, সন্ত্রাস দমনের রাস্তা আমাদের জানা রয়েছে’]

রিফিউজিরা এএফপিকে জানিয়েছেন, ক্যাম্পগুলিতে পর্যাপ্ত খাদ্য, পানীয়ের অভাবে শিশুদের অন্যত্র খাদ্য সংগ্রহের জন্য পাঠানো হচ্ছে। তাদের মালপত্র বহনের মতো কাজে নামাচ্ছে বাবা-মায়েরাই। অথচ তাঁদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইসলাম-বিরুদ্ধ। ফারহানা সুলতানা নামে এক মহিলা বলছেন, ‘অনেক মহিলাই জন্মনিয়ন্ত্রণকে পাপ বলে মনে করেন।’ তিনি জানিয়েছেন, রাখাইনে থাকার সময়ও তাঁদের মধ্যে কেউই ফ্যামিলি প্ল্যানিং ক্লিনিকে যেতে চাইতেন না। মায়েরা মনে করতেন, মায়ানমার সরকারের ওষুধ তাঁদের সন্তানদের ক্ষতি করবে। সাত সন্তানের মা সাবুরা জানিয়েছেন, তিনি স্বামীকে কন্ডোম ব্যবহারের কথা বললেও তাঁর স্বামী শুনতে চাননি। কারণ, তিনি মনে করেন একাধিক সন্তান হলে পরিবার চালানো সহজ হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ