সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে চলা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের ফলে বাংলাদেশে নেমেছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল। বৃহস্পতিবার ভোররাতে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন টেকনাফ থানার নাফ নদীতে শরণার্থী বোঝাই একটি নৌকো ডুবে যায়। ওই দুর্ঘটনায় শিশু ও মহিলা-সহ মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ।
[রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিহ্নিত করে বিতাড়িত করা হবে, জানাল কেন্দ্র]
জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে উদ্ধারকারী দল। শুরু হয়েছে অভিযান। ইতিমধ্যে নাফ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০টি মৃতদেহ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। সূত্রের খবর, শাহপরীর দ্বীপের মাঝেরপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, জালিয়াপাড়া, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া ও ঘোলারপাড়া দিয়ে স্থানীয় দালালচক্র চোরাইপথে রাতের আঁধারে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাচার করছে। বুধবার ভোরেও নাফ নদীতে নৌকা ডুবি হয়। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ছয় শরণার্থীর। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বা আইওএম জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে মায়ানমার থেকে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
[মায়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন চলছে, কার্যত স্বীকার রাষ্ট্রসংঘের]
মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে তুমুল লড়াই চলছে রোহিঙ্গা জঙ্গি ও সে দেশের সেনাবাহিনীর। ফলে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে শরণার্থীরা। গত সপ্তাহ থেকে লাগাতার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। গত সপ্তাহে মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে ৮৯ জন নিহত হয়। ‘দ্য আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’ নামের জঙ্গি সংগঠনটি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে আরও হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল। তারপর থেকেই আরও অবনতি হয় পরিস্থিতির। ইতিমধ্যে এই পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি ও মায়ানমার সেনার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, বৌদ্ধপ্রধান দেশ মায়ানমারে রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা মানুষ। তবে আজও তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি নেইপিদাও। মিলিটারি জুন্টার হাত থেকে দেশের আংশিক ক্ষমতা আং সু কি-র হাতে গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
[মৃতকে ভেন্টিলেশন ঢুকিয়ে বিল বাড়ানোর অভিযোগ, কাঠগড়ায় হাসপাতাল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.