সুকুমার সরকার, ঢাকা: স্বামীর নির্যাতনের প্রতিবাদে থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন তরুণী। তবে থানায় কোনও সাহায্য পাননি তিনি। তাই মানসিক অবসাদে থানার সামনেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত গৃহবধূর। ঢাকার রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ঘটনা। ওই গৃহবধূকে প্রথমে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভরতি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: চুলের খোঁপায় ইয়াবা মাদক পাচার তরুণীর, অভিনব কায়দা ফাঁস করল পুলিশ]
লিজা নামে ওই তরুণী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রাজশাহী মহিলা কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। ওই তরুণীর বান্ধবীরা বলেন,”২০ জানুয়ারি লিজার সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের খানদুরার বাসিন্দা সাখাওয়াৎ হোসেনের বিয়ে হয়। পরিবারকে না জানিয়েই সাখাওয়াৎ ওই তরুণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। দিনের পর দিন কেটে গেলেও পরিবারের সম্মতি না পেয়ে সাখাওয়াৎ তার নববিবাহিত স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেননি। এরপর ওই যুবক তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দেয়।”
বাধ্য হয়ে স্বামীর খোঁজে নাচোলে ছুটে যান তরুণী। তাঁকে দেখেই সাখাওয়াৎ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। স্বামীর বিরুদ্ধে নাচোল থানার দ্বারস্থ হন গৃহবধূ। পুলিশ ওই যুবক এবং তার বাবাকে থানায় ডেকে আনে। রাজশাহীতে ফিরে আবারও সাখাওয়াৎ তার তরুণী স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দেন। অভিযোগ, এরপরই সাখাওয়াতের পরিবারের লোকজন ওই তরুণীকে মারধর করেন। পুলিশের দ্বারস্থ হলে তরুণীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাধ্য হয়ে শনিবার দুপুরে আবারও শাহমখদুম থানায় যান তরুণী। বারবার পুলিশকে অভিযোগ নিতে অনুরোধ করেন তিনি। তবে তরুণীর দাবি, তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন পুলিশ আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: উৎসবের আগেই বাংলায় এল পদ্মার ইলিশ, জিভে জল খাদ্যরসিকদের]
থানা থেকে বেরনোর পরই মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়েন তরুণী। একটি দোকান থেকে কেরোসিন তেল কেনেন। থানার বাইরেই গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি। স্থানীয়রা তাঁর গায়ে জল ঢেলে আগুন নেভায়। তবে ততক্ষণে শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছে ওই তরুণীর। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ঢাকার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তরুণীর শ্বাসনালির ক্ষতি হয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।