সুকুমার সরকার, ঢাকা: পয়লা বৈশাখের আনন্দে রবিবার মাতোয়ারা বাংলাদেশ৷ ভাষাবিদ ড: মহম্মদ শহিদুল্লার পঞ্জিকা অনুসারে ১৪ এপ্রিল ওদেশে পালিত হয় এপ্রিল পয়লা বৈশাখ। এবং দিনটা শুরুই হয় পান্তা-ইলিশ দিয়ে। এটাই ওপার বাংলার মানুষের প্রাণের উৎসবের রীতি। আর এই রেওয়াজের সুযোগ নিয়েই গলাকাটা দামে ওদেশে বিকোচ্ছে ইলিশ৷ বরিশালে পোর্ট রোডের বাজারে দু’কেজি ওজনের চারটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকায়। পাল্লা দিয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হয়েছে আরও বেশি ওজনের ইলিশ।
[ আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানির শাস্তি, অভিযুক্ত ইমামের চোখে লংকার গুঁড়ো ছিটিয়ে দিলেন ছাত্রী ]
ব্যবসায়ীরা জানান, গত ছ’মাসের মধ্যে এই বৈশাখি মরশুমেই ইলিশের দাম উঠেছে সর্বোচ্চ৷ পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের আকাশছোঁয়া দামে স্বভাবতই হতাশ ক্রেতারাও। বরিশাল পোর্ট রোডের মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিত কুমার দাস মনু বলেন, ‘‘শনিবার ইলিশের আমদানি ছিল শুক্রবারের চেয়েও কম৷ শুক্রবার ২৫০-৩০০ মন ইলিশ বাজারে এসেছিল৷ শনিবার আমদানি হয় মাত্র ১০০-১৫০ মন ইলিশ।’’ বঙ্গবাসীর প্রিয় মাছের আমদানি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘দেশের প্রধান কয়েকটি নদীতে ইলিশ চাষ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযান চালিয়ে এই চাষ বন্ধ করেছে মৎস্য দপ্তরের আধিকারিক, উপকূল বাহিনী ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা। ফলে ইলিশের সরবরাহ কমেছে। দামও বাড়ছে।’’ ছোট আকারের ইলিশ রক্ষার জন্য কয়েক বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছে হাসিনা সরকার। একাধিক নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে৷ কিন্তু বিভিন্ন উৎসবে মৎস্যপ্রেমী বাংলাদেশের মানুষদের পাতে ইলিশ চাই। এবং পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ তাঁদের চাইই চাই।
[ আরও পড়ুন: ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত তিন, আহত পাঁচ ]
এবছর ছোট আকারের ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে। আকারে একটু বড় হলেই দাম আরও বেশি। কোথাও কোথাও প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকায়। এমনকী, ইলিশের দাম পৌঁছে গিয়েছে চার হাজার টাকা পর্যন্ত। অজিত কুমার দাস মনু বলেন, ‘‘শনিবার দেড় কেজি সাইজের ইলিশের এক মনের দাম ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সেইমতো প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম দাঁড়িয়েছে তিন হাজার টাকা। যা গত ছ’মাসে সর্বোচ্চ৷’’ বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল দাস বলেন, ‘‘জেলেরা মাছ শিকার করতে না পারায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমেছে। তবে মে মাসের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বাজারে ইলিশ সরবরাহ বেড়ে যাবে। তখন ইলিশের দামও কমে যাবে।’’ কিন্তু তার আগে পয়লা বৈশাখে ইলিশ আস্বাদন থেকে কিছুটা বঞ্চিতই থাকতে হল পদ্মাপাড়ের মানুষজনকে৷