সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির মায়ানমার সংলগ্ন তুমব্রু সীমান্তে শনিবার আবারও সেনার সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে বার্মা। কাটাতারের বেড়া ঘেষে সীমান্তের কোনাপাড়া শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গাদের সরে যেতে ঘোষণা করছে মায়ানমারের সেনারা। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছুড়ে মারা হচ্ছে ইট-পাটকেল এবং খালি মদের বোতল।
[কর্ণাটকে বিজেপির স্বপ্নভঙ্গের নেপথ্যে আঞ্চলিক ফ্রন্টের জয়, জোটের পাশে মমতা]
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গারা জানায়, দুই মাসের ব্যবধানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে হঠাৎ করে সৈন্য সংখ্যা বাড়াচ্ছে মায়ানমার। শনিবার ভোর থেকে সকাল সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত তুমব্রু পয়েন্টে নতুন করে সাতটি পিকআপ ভ্যানে করে সেনার সদস্যরা জড়ো হয়েছে। অস্ত্র নিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার কাছেই অবস্থান নিয়েছে তারা। আর কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে পাহাড়ের চূড়ায় ৩০ গজ পরপর দূরত্বে স্থাপন করা বাঙ্কার থেকে মাইকিং করা হচ্ছে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অন্যত্র চলে যেতে। শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দলনেতা দিল মোহাম্মদ নুর হোসেন বলেন, “বর্ষায় শূন্যরেখার আশ্রয় ক্যাম্পটি খালের জলে তলিয়ে যায়। জীবন রক্ষায় ঢাকার ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহযোগিতায় শূন্যরেখায় পাঁচ ফুট উচু মাচানঘর তৈরি করা হচ্ছে। এ খবর পেয়ে আবারও পাগল হয়ে গিয়েছে মায়ানমারের সেনা-বিজিপি সদস্যরা।” তিনি আরও জানান, শূন্যরেখা থেকে রোহিঙ্গাদের চলে যেতে বার্মিজ সেনা কিছুক্ষণ পর পর মাইকিং করছে। ইট এবং মদের খালি বোতল ছুড়ে মারছে ক্যাম্পের ঝুপড়ি ঘরে। এর আগে মার্চ মাসের শুরুর দিকে সীমান্তে সেনা-বিজিপি বাড়িয়েছিল মায়ানমার। এদিকে হঠাৎ করে সেনা টহল ও মাইকিং নিয়ে জিরো লাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা আতঙ্কে রয়েছেন। কক্সবাজার বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানান, মায়ানমার সীমান্ত থেকে মাইকিং করা হলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
এদিকে আগামী দুই মাসের মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালি জেলার ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম শাহ কামাল। শনিবার কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি ২/২ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি মহড়ার উদ্বোধনের সময় একথা জানান তিনি। সচিব বলেন, “কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে এক লাখ ৩৩ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে ৩২ হাজার পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। এদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার পরিবারকে ক্যাম্পের অন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে।” বর্ষাকালে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, পাহাড়ি ধসের ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বিশাল পাহাড়ি এলাকায় রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ায় বন ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নোয়াখালির ভাসানচরে স্থানান্তরের পর খালি জায়গায় নতুন করে গাছ লাগানো হবে।
[রাতের মুম্বইয়ে কতটা নিরাপদ লোকাল ট্রেন, জানান দিচ্ছে ছবি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.