সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে উপকূল এলাকা-সহ বাংলাদেশের বহু জায়গায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেশের নানা প্রান্তে প্রাণহানিও ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে বহু পশুরও। ঝড়বৃষ্টির জেরে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে কৃষি জমিগুলোরও। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবারে রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দিয়েছে সবরকম সাহায্যের।
এদিন ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার সময় হেলিকপ্টার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিস্থিতি দেখেন শেখ হাসিনা। দেশের দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও বরগুনা জেলা পাথরঘাটা যান তিনি। সমস্ত কিছু দেখে হাসিনা বলেন, “আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রকৃতির নিয়মেই আসে। সেখানে মানুষের জীবন মান বাঁচানোই সবচেয়ে বড় কথা। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে, যাতে বর্ষার আগেই এগুলো পুণঃর্নির্মাণ করে মানুষকে জলোচ্ছ্বাসে হাত থেকে বাঁচানো যায়। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আওয়ামি লিগ জনগণ ও দেশের উন্নয়নে সর্বদা আন্তরিকভাবে নিবেদিত।” পাশাপাশি তিনি প্রশাসনের সঙ্গে বসে ক্ষতির হিসাব-নিকেশও করেছেন। ঝড়ে যাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, সেগুলোর সংস্কার এবং কৃষকদের বীজ, সার প্রদান-সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গত রবিবার রাতে বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। যত সময় যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে নানা অঞ্চলে ধবংসের ছবি পরিষ্কার হচ্ছে। রেমালের আঘাতে দেশের বিভিন্ন জেলায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। উপকূল ও তার আশপাশের ১৯টি জেলায় প্রায় ২ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, বৃহস্পতিবার সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করে আরও ৪৫টি হরিণের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া অতিভারী বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের করা ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪৮টি জেলার কৃষিজমিতে রেমালের প্রভাব পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩টি জেলা। ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ১০৯ হেক্টর ফসলি জমির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.