সুকুমার সরকার, ঢাকা: সংসার করতে রাজি নয় মেয়ে। তাই কথার ছলে নতুন জামাইকে বিয়ের প্রস্তাব দেন শাশুড়ি। আর তাতেই হল কাল। সালিশি সভার নির্দেশে জামাইকে বিয়ে করতে বাধ্য হন ওই মহিলা। সুবিচারের আশায় পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। ওই সালিশি সভায় উপস্থিত মোট এগারোজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মহিলা। গোপালপুর থানার পুলিশকে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাংলাদেশের গোপালপুরের কড়িয়াটা গ্রামের বাসিন্দা তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় ধনবাড়ির পূর্বপাড়ার যুবকের। বিয়ের পরদিনই তরুণীর শ্বশুরবাড়ি যান তাঁর মা। সেখানে সপ্তাহখানেক ছিলেন তিনি। ১১ অক্টোবর মেয়ে ও জামাইকে নিয়ে নিজের বাড়ি ফেরেন ওই তরুণীর মা। পরেরদিন সকালে তরুণী জানান তিনি আর সংসার করবেন না। তাতেই শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি। স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল কাদের তালুকদারের কাছে যান ওই তরুণীর পরিজনেরা। এরপর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রামে সালিশি সভা বসে। ওই সালিশি সভায় প্রথমে তরুণীকে সংসার করতে বলা হয়। তবে তাতে তিনি রাজি হননি। তরুণীর কথা শুনে রেগে যান তাঁর মা। তিনি বলেন, “মেয়ে সংসার না করলে, আমিই জামাইকে বিয়ে করব।” সেকথা শোনার পরেও তরুণী নিজের সিদ্ধান্তে অনড়।
এদিকে, বেফাঁস মন্তব্যের জেরে ওই সালিশি সভায় উপস্থিতরা বলাবলি করতে শুরু করেন, শাশুড়ি এবং জামাইয়ের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সালিশি সভার মাতব্বরদের চাপে বাধ্য হয়ে নিজের স্ত্রীকে তিন তালাক দেন জামাই। তরুণীর বাবাও তাঁর স্ত্রীকে তিন তালাক দেন। এরপরই ওইদিন জামাই এবং শাশুড়ির বিয়ে হয়। যদিও ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ আইন অনুযায়ী, একই দিনে তালাক ও বিবাহ দণ্ডনীয় অপরাধ। ফলে একই বৈঠকে তালাক দিয়ে এই বিয়ে কোনওভাবে আইনসিদ্ধ নয়। আবার ইসলামি বিধান ও অনুশাসন অনুযায়ী, শাশুড়িকে বিয়ে করা চিরস্থায়ী হারাম।
[আরও পড়ুন: ধর্ষকদের পিটিয়ে নিজেই জড়ালেন ধর্ষণে! বাংলাদেশের ছাত্রলিগ নেতার কাণ্ডে তীব্র নিন্দা]
গোপালপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় তখন কোনও অভিযোগ না পাওয়ায় কোনও তদন্ত হয়নি। তবে এখন মামলা হয়েছে। এবার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”