সুকুমার সরকার, ঢাকা: নোভেল করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশে একদিনে মৃত্যু হল তিন চিকিৎসকের। এর ফলে এখন পর্যন্ত মোট ১৫ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। আর এখনও পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত তিন চিকিৎসক হলেন, বারডেমের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মহম্মদ মহিউদ্দিন, ডিজি হেলথের অবসরপ্রাপ্ত ইভালুয়াটার অফিসার ডা. এ কে এম ওয়াহিদুল হক এবং চট্টগ্রামের চিকিৎসক এহসান।।
বুধবার রাত ৯টার সময় সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য দেন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সসিবিলিটিসের (FDSR) জয়েন্ট সেক্রেটারি ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরি। তিনি বলেন, ঢাকার ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মহম্মদ মহিউদ্দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে বুধবার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রাত ১টার সময় তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।’ডা. রাহাত আরও বলেন, ‘গতকাল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢামেকের তিন নম্বর ওয়ার্ডে ভরতি হন ডা. এ কে এম ওয়াহিদুল হক। পরে তাঁর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ডা. এ কে এম ওয়াহিদুল হক ডায়াবেটিস, হাইপারটেশন ও পারকিনসনিজম ইত্যাদি রোগে ভুগছিলেন। এদিকে বুধবারই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন চট্টগ্রামের মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. এহসান। দুপুর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এপ্রসঙ্গে ডা. রাহাত আনোয়ার জানান, আজ করোনায় মোট তিনজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ জন চিকিৎসক করোনায় মারা গিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: লিবিয়ায় নিকেশ ২৬ বাংলাদেশি হত্যার মূলহোতা খালেদ আল-মিশাই ]
এদিকে চিকিৎসক, নার্স ও প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চিনা মেডিক্যাল টিম করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সহায়তা দিতে আগামী ৮ জুন বাংলাদেশে আসছে। বুধবার ঢাকায় চিনের দূতাবাস এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশে চিনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন এবং কাউন্সেলর ইয়ান হুয়ালং এ সম্পর্কে জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ (Covid-19) মহামারির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াই আরও জোরদার করতে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত ২০ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ করেন। সেই আলোচনায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে থাকতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই চিনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ৮ জুন যে চিকিৎসা টিমটি আসবে তারা চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মাধ্যমে সংগঠিত এবং হাইনান প্রদেশের ১০ অভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশে তারা ২ সপ্তাহ থাকার সময় রোগীদের পরিদর্শন করবে এবং মনোনীত হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এবং পরীক্ষার সাইটগুলিতে কাজ করবে। করোনা মহামারি নিয়ে আলোচনা করবে। একে নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ও চিকিৎসার জন্য নির্দেশ এবং প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেবেন।