সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনের তোরজোড় শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই ভোটযুদ্ধে কি নামতে পারবে আওয়ামি লিগ? কারণ ছাত্র-জনতার ‘গণ অভ্যুত্থানে’ দেশ ছেড়েছেন দলের সভাপতি তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দলকে দ্রুত নিষিদ্ধ করে দেওয়ার দাবি তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। এমনকী শুক্রবার আওয়ামির বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থানে বিসেন বৈষম্য তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ইউনুসের প্রেস উইং আজ বিকালে জানিয়েছে, আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে এখন হাসিনার দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি, জুলাই ঐক্য শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী, ইনকিলাব মঞ্চ, ছাত্রপক্ষের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন আজকের ওই বিক্ষোভে। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন উপস্থিত ছিল সেখানে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশ-র্যাব অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীদের অবস্থান ছিল রাস্তায়। তাঁরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। যেমন ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামি লিগ নো মোর’, ‘খুনি লিগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’ ইত্যাদি। কর্মসূচিতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আপ বাংলাদেশের আলি আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, মহম্মদ হিজবুল্লা, শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের শরিফ ওসমান হাদি-সহ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এছাড়া এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারি, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, নুসরাত তাবাসসুম, তাজনুভা জাবিন, সারোয়ার তুষার অংশ নিয়েছেন।
এই বিক্ষোভের জেরে বিকালে বিবৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে আওয়ামি লিগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। ততদিন পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। এছাড়া, সরকারের পক্ষে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভের বিষয়ে সরকার অবগত। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
এখানেই প্রশ্ন উঠছে ইউনুস সরকারের ক্ষমতা নিয়ে। কারণ এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। বৈধতা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলকে কী তারা এইভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে? এদিকে,আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ফলে এখন আওয়ামিকে নিয়ে চেপে ইউনুস সরকার। এনসিপির নেতারা বলছেন, আওয়ামি লিগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনও নির্বাচন হবে না। এই দাবিতে এনসিপি ঢাকায় বড় সমাবেশও করেছে। এদিকে, যত দিন যাচ্ছে বিএনপির দ্রুত ভোটের দাবি জোরাল হচ্ছে। ফলে নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে ‘নতুন’ বাংলাদেশে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.