বিপ্লব দত্ত, নদিয়া: বৃদ্ধার গলা থেকে বেরল ১ কিলো ৭০০ গ্রাম ওজনের টিউমার। যুগান্তকারী ঘটনাটি ঘটালেন নদিয়ার কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকরা।সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিরাটাকার টিউমারটিকে বৃদ্ধার গলা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিপদ কাটিয়ে ভালো আছেন ৬৪ বছরের মিনতি কর। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে কাটিয়ে কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় খুশির আমেজ মিনতিদেবীর পরিবারেও।
[পুলিশের তাড়া থেকে বাঁচতে ভাগীরথীতে ঝাঁপ, খোঁজ নেই ২ শ্রমিকের]
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে গলার অস্বস্তিতে ভুগছিলেন মিনতি কর। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়ার ৬৫ নম্বর দেবেনবাবু রোডে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ঠিকমতো চিকিৎসকও দেখিয়ে উঠতে পারেননি। অস্বস্তি নিয়েই কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে আসেন মিনতিদেবী। পরীক্ষা করে জানা যায়, তাঁর গলার প্যারোটিভ গ্রন্থিতে বিরাটাকার টিউমার রয়েছে। সেজন্যই কষ্ট পাচ্ছেন তিনি। মিনতিদেবীর বয়সজনিত কারণ ও টিউমারের অবস্থান নিয়ে ধন্দে পড়েন চিকিৎসকরা। এই বয়সে এতবড় মাপের একটি অস্ত্রোপচারের ধকল মিনতিদেবী নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে বিস্তর আলাপ আলোচনাও চলে। কিন্তু যন্ত্রণা থেকে রোগিণীকে রেহাই দেওয়াও চিকিৎসকদেরই কর্তব্য। তাই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়। সেইমতো গত ২৯ জানুয়ারি জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভরতি হন মিনতি কর। পরের দিন অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতাল লাগোয়া কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের তিন শল্য চিকিৎসক। চিকিৎসক ইন্দ্রনীল পাল, এস কুমার ও বিভাস মণ্ডলের তত্ত্ববধানে সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। গলা থেকে বের হয় বিরাটাকর টিউমারটি। বিপণ্মুক্ত হন মিনতি কর। তাঁর মুখে হাসি ফোটে।
এদিকে সফল অস্ত্রোপচার হলেও বয়সের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন রোগিণী। প্রায় সপ্তাহখানেক হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা। সুস্থবোধ করায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে। বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়ে চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। সফল অস্ত্রোপচারের পর রোগিণী সুস্থ হয়ে ওঠায় হাসি ফুটেছে চিকিৎসকদের মুখেও।