BREAKING NEWS

১৩ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  রবিবার ২৮ মে ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

মাত্র ১২ বছরেই মাধ্যমিকে বসছে আমতার ‘বিস্ময় বালিকা’ সইফা

Published by: Kumaresh Halder |    Posted: October 27, 2018 12:22 pm|    Updated: October 27, 2018 12:22 pm

12-year-old Bengal girl to appear for Madhyamik exams

দীপঙ্কর মণ্ডল ও সন্দীপ মজুমদার: এই বয়সে ভাল করে কথাই ফোটে না। অথচ তখনই গজল গাইত দেড় বছরের মেয়ে! কয়েকমাসের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের ‘কথা ও কাহিনী’ থেকে আবৃত্তি। আট বছরে বাড়িতে বসেই ক্লাস টেনের সিলেবাস শেষ!

এবার মাধ্যমিকে বসতে চলেছে হাওড়ার সেই বিস্ময় বালিকা সইফা খাতুন। ১২ বছরে মাধ্যমিক দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু সইফার বিশেষ প্রতিভা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার তাকে সেই অনুমোদন দিয়েছে। সইফা দশ ক্লাসের বেড়া ডিঙিয়ে গেলে সেটাও হবে অনন্য নজির।  

[কুশমণ্ডির বিখ্যাত মুখোশ শিল্পকে বিদেশের বাজারে বিক্রির উদ্যোগ]

হাওড়ার আমতা ব্লকের অখ্যাত গ্রাম কাষ্ঠসাংড়া। এখানেই বাড়ি বিস্ময় বালিকা সইফার। কোনওদিন স্কুলে যায়নি। পরিবারের উদ্যোগে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব বই জোগাড় হয়েছে। একবার চোখ বুলিয়েই  তা হৃদয়ে গেঁথে ফেলেছে মেয়েটি। তবে মাধ্যমিকে বসার অনুমতি মসৃণ গতিতে আসেনি। রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আবেদন গিয়েছিল। যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষায় পাস করতে হয়েছে সইফাকে। শুক্রবার তার আর্জি মঞ্জুর করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।  

বহু চিঠিই আসে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে। কিন্তু ১২ বছরে মাধ্যমিকে বসার আবেদন! এমন আর্জি আগে আসেনি নবান্নে। যদিও সরকারি নথি বলছে পুরুলিয়ার মৌসুমী চক্রবর্তী নামে এক ছাত্রীকে খুব অল্প বয়সে মাধ্যমিকে বসার অনুমতি দিয়েছিল বাম সরকার। ১৪ বছর বয়স না হলে মাধ্যমিকে বসার অনুমতি মেলে না। যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষায় সবাইকে চমকে দিয়েছে সইফা। আগামী বছর বহিরাগত পরীক্ষার্থী হিসাবে মাধ্যমিকে বসার ছাড়পত্র দিতে বাধ্য হয়েছে পর্ষদ। পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “বয়স কম হলেও পরীক্ষায় ওই ছাত্রী খুব ভাল ফল করেছে। আগামী বছর মেয়েটির ১২ বছর হবে। আমরা ওকে মাধ্যমিকে বসার অনুমতি দিচ্ছি।”

[চুরি-ছিনতাইয়ের চেয়ে পদপিষ্টের চিন্তাই নিরাপত্তার মূল বিষয় কালীপুজো ও ছটে]

সইফার বাবা মহম্মদ আইনুল গ্রামীণ চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, “টলমলে পায়ে হেঁটে বেড়ানোর বয়স থেকেই ওর মধ্যে বিরল ক্ষমতা দেখা যায়। ওই বয়সে সঠিক উচ্চারণে কথা বলা সম্ভব নয়। দেড় বছরে ছোট্ট মেয়েটি অনুষ্ঠানে গজল গাইত। ঝরঝরে আবৃত্তিও করত আমার মেয়ে।”

আমতার কাষ্ঠসাংড়া বাংলার পরিচিত মফস্বলগুলির মতোই নিস্তরঙ্গ। দেড় বছর বয়সে গজল গাওয়ার খবর এলাকায় খুব বেশি ছড়ায়নি। মধ্যবিত্ত পরিবার। পরিবারের বড় মেয়ে। স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক ও পরিচিতরা বাহবা দেন। খুশি হন বাবা-মা। যদিও তাঁরা প্রথমে বুঝতেই পারেননি এই মেয়ে বিরল প্রতিভার অধিকারী। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার স্মৃতিশক্তিও বাড়তে থাকে পাল্লা দিয়ে। কোনও গৃহশিক্ষক নেই। নিজেই নিজের শিক্ষক এই মেয়ে। ৮ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির সমস্ত বই পড়ে ফেলেছে সে। শুধু পড়া নয়, হুবহু সব মনেও রাখতে পারছে। একই ছায়া দেখা গিয়েছিল মৌসুমীর ক্ষেত্রেও। তবে শৈশবের তুলনায় পরে তার স্মৃতিশক্তির জোর কিছুটা কমে যায়।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে