অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: রাতে মশার ধুপ জ্বালিয়ে শোওয়ার মর্মান্তিক পরিণতি। বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু তিনজনের। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া ডোমজুড়ে অঙ্কুরহাটির একটি জুতো কারখানায়। বুধবার সকালে কারখানার অফিস ঘর থেকে এক কিশোর-সহ তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, রাতে দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরে মশার ধূপ জ্বালানো হয়েছিল। মশার ধূপের বিষাক্ত গ্যাসেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই তিনজনের।
[পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রচারে বিরামহীন, দুর্ঘটনাতেই প্রাণ গেল দুই কলেজ ছাত্রর]
অঙ্কুরহাটিতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের কাছে খুব কাছেই জুতো কারখানাটি। দোতলার বাড়ির নিচে কারখানা, আর ওপরে অফিস ঘর। ওই অফিস ঘরেই রাতেই শুতেন কারখানার কর্মী কমলেশ যাদব। তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের। দিন কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশ পরিবারের লোকেরা কমলেশের কাছে এসেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে অফিস ঘর লাগোয়া একটি ঘরে শুয়ে ছিলেন জয়প্রকাশ, অভিষেক ও যোপু। মশার হাত থেকে বাঁচতে জুতোর বাক্সের উপর মশার ধূপ জ্বালিয়েছিলেন তাঁরা। শীতের রাতে বন্ধ ছিল ঘরের দরজা, জানলা। বুধবার সকালে ওই তিনজনের আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে কারখানা অন্যকর্মীদের সাহায্যে দরজা ভাঙেন কমলেশ। ঘরের মেঝেতে অভিষেক, জয়প্রকাশ ও যোপুকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর দেওয়া হয় সাঁকরাইল থানায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে, তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, জুতোর বাক্সের উপর জ্বলতে থাকা মশার ধূপ থেকেই বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। ঘুমন্ত অবস্থায় সেই গ্যাস শরীরে প্রবেশ করাতেই মারা যান ওই তিনজন।
[বাংলাদেশে জঙ্গি শিবিরের হদিশ, মালদহ সীমান্তে জারি হাই অ্যালার্ট]
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে জেনারেটরের ঘরে গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনার বিরল নয়। তবে মশার ধূপের গ্যাসে মৃত্যু নজিরবিহীন। কী বলছেন চিকিৎসকরা? চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, মশার ধূপ থেকে কার্বন মনোক্সাইড তৈরি হয়। এই গ্যাসে শরীরে ঢুকলে, দ্রুত রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসক অলোক গোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন, মাত্র ৫ শতাংশ কার্বন মনোঅক্সাইড শরীরে ঢুকলেও মৃত্যু হতে পারে। এমনকী, সাধারণ ধূপকাঠি ও সিগারেটের ধোঁয়াতেই মৃত্যুর হতে পারে।
[তোমার উত্তরাধিকারকে উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দেব, ফেসবুকে বার্তা প্রিয়-পুত্রর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.