'ক্লায়েন্ট' সেজে ভুয়ো আধার চক্রের পর্দাফাঁস পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: সিনেমার মতো গল্প বানিয়ে জাল আধার কার্ড চক্রের ফাঁস করল ভক্তিনগর থানার পুলিশ। ‘ক্লায়েন্ট’ সেজে আধার কার্ড বানাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরল ৭ জনকে। শুধু তাই নয়, প্রচুর নথিপত্র-সহ জাল আধার, ভোটার কার্ড ও জাতিগত শংসাপত্র উদ্ধার করা হয়। কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে এইসবই তারা নিমেষে বানিয়ে দিত। সোমবার সকালে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায়। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়েই এদিন সকালে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় একটি বহুতল বিল্ডিংয়ে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং ভক্তিনগর থানার পুলিশ ও আশিঘর আউটপোস্টের পুলিশ অভিযান চালায়। সেখানেই জাল আধার কার্ড তৈরি হচ্ছিল। ক্রেতা সেজেই ওই আধার কার্ড তৈরির সেন্টারে এসেছিল স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং ভক্তিনগর থানার পুলিশের একটি টিম। কয়েক হাজার টাকায় আধার কার্ড তৈরি করার ডিল করা হয়। তারা রাজি হতেই হাতেনাতে ধরা হয় চিত্তরঞ্জন সরকার, ষষ্ঠী মণ্ডল, টিটু দাস, বিশ্বজিৎ রায়, মঙ্গলু সিংহ গৌতম, হরিকিশোর রায় ও আবেশ গুপ্তাকে। জানা গিয়েছে, বাড়ির মালিক চিত্তরঞ্জন সরকারের স্টুডিওতে তৈরি হত নকল আধার, ভোটার কার্ড এবং নকল কাস্ট সার্টিফিকেট। এদিন পুলিশের অভিযানে একের পর এক নথি বেরিয়ে আসে। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং ভক্তিনগর থানার পুলিশ ঘিরে ফেলে বাড়ি।
জানা গিয়েছে, পাঁচ হাজার দশ হাজার টাকায় তৈরি হতো নকল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং কাস্ট সার্টিফিকেট। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল ইস্টার্ন বাইপাসের ঢাকেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন ফকদই বাড়ির ফটো স্টুডিওতে নকল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং কাস্ট সার্টিফিকেট তৈরি হয়। এই খবর পাওয়ার পর ফাঁদ পাতে পুলিশ। অবশেষে পুলিশের জালে সাতজন ধরা পড়ে। তবে এই চক্রে আরও কেউ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং ভক্তিনগর থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশিদেরও তৈরি করে দেওয়া হত এই সরকারি নথি। এখনও পর্যন্ত কাদের আধার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এবিষয়ে ভক্তিনগর থানার আইসি অমিত অধিকারী বলেন, “নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলো নিয়ে তদন্ত শুরু হবে। তারা কবে থেকে এই কাজ করছে। কাদের বানিয়ে দিয়েছে। সবটাই জানতে হবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.