ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাকপুর: পারিবারিক অশান্তির জেরে বাবা ও ভাইদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে খুন। গুরুতর অপরাধের অভিযোগ উঠল এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। খুনের পর গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দুর্ঘটনার রূপ দিতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু এলাকাবাসীর নজরে পড়ে সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায়। অভিযুক্ত আইনজীবী, তার বাবা ও ভাইদের ধরে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করে।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুর প্রিয়নগরে। অভিযুক্ত ওই আইনজীবীর নাম অনিল হেলা। গণপিটুনিতে তার বাবা লক্ষ্মীলাল হেলা ও দুই ভাই—সহ হাসপাতালে ভরতি সে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই অনিলের স্ত্রী সবিতাদেবীর উপর অত্যাচার চালাত পরিবারের লোকেরা। এদিন সকালেও চরম অশান্তি হয়। তারপরই হঠাৎ বিকেলে তারা জানতে পারেন সবিতাদেবী ও তাঁর বড় মেয়ে নেহা মারা গিয়েছেন। পাড়ার লোকেরা বাড়ির ভিতর ঢুকে গিয়ে দেখেন, মেঝেতে সবিতাদেবী ও তার মেয়ের নিথর দেহ পড়ে। গোটা ঘরে গ্যাসের গন্ধ ম ম করছে। তাতেই সন্দেহ হয়।
[আরও পড়ুন: ডিজিটাল কার্ড ছাড়া মিলছে না রেশন, সমস্যায় কয়েক হাজার পরিবার]
এলাকার বাসিন্দা স্বপন দে বলেন, “প্রায় প্রতিদিনই ওই বাড়িতে অশান্তি হত। অনিল হেলা, তার বাবা ও ভাইয়েরা মিলে সবিতাদেবীকে মারধর করত। এদিন সকালেও পাড়ার লোকেরা জেখেছেন যে ওই গৃহবধূকে চুলের মুঠি ধরে মারতে মারতে ঘরে নিয়ে যায় অনিল। তারপরই এই ঘটনা।” ওই গৃহবধূ ও তার মেয়ে কীভাবে মারা গেলেন সে প্রশ্ন করতেই অমনিল ও তার ভাইয়েরা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। এরপরই পাড়ার লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের গণপিটুনি দেয়। তবে তার আগেই অনিলের মা ও বোন সমস্ত টাকা পয়সা ও গয়না নিয়ে চুপিসারে পালিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
সবিতাদেবীর ছোট মেয়ে ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিল। প্রতিবেশীদের দাবি, তাকে চাপ দিতেই সে জানিয়েছে, বাবা, দাদু আর কাকারা মিলে মা আর দিদিকে খুন করেছে। তবে এবিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ পুলিশ। অনিল, তার বাবা ও ভাইদের জনরোষের হাত থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করে তারা। বারাকপুর কমিশনারেটেক ডিসি, সেন্ট্রাল জোন অমনদীপ জানিয়েছেন, “দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে অভিযুক্তরা হাসপাতালে ভরতি, তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”