মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে ওই কিশোরীর মা।
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: পড়তে না বসে মোবাইলে মগ্ন থাকায় বকাঝকা করেছিলেন মা। আর তার জেরেই অভিমানে আত্মঘাতী একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার বাগি এলাকায়। মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখার পর খেকেই অসুস্থ ওই কিশোরীর মা।
সাথী মণ্ডল নামে বছর ষোলোর ওই কিশোরী দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর শিক্ষাসংঘ শিক্ষায়তনের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে শুরু করে সে। তার মা ও দাদা তাই দেখে মোবাইল রেখে পড়তে বসতে বলেন। কিন্তু সেসব কথায় কান না দিয়ে সাথী মোবাইলেই মগ্ন ছিল। কথা না শোনায় তার মা তাকে প্রচণ্ড বকাবকি করেন। মায়ের বকাবকিতে মোবাইল ফোনটি নিয়ে সোজা নিজের ঘরে ঢুকে যায় সে। ঘরের দরজায় খিল এঁটে দেয় অভিমানী সাথী। কিন্তু ঘটনা যে অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকজন। তাঁরা যে যার কাজে চলে যান। এদিকে বেলা গড়িয়ে দুপুর হলেও মেয়ে দরজা খুলছে না দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। ঘরের দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন উদ্বিগ্ন বাড়ির লোকজন। তাঁদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। অনেক ডাকাডাকির পরেও দরজা না খোলায় ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে সাথী। দেরি না করে সাথীকে নামিয়ে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে যান পরিজনেরা। সেখানেই চিকিৎসকরা ওই ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ছাত্রীর দাদা শুভ মণ্ডল জানিয়েছেন, মোবাইল নিয়ে মগ্ন থাকার কারণে বোনকে অনেকবারই বকাবকি করেছেন তাঁরা। কিন্তু কখনওই সেভাবে মনখারাপ করতে দেখা যায়নি সাথীকে। এদিনের ঘটনায় বোন যে অতটা অভিমানী হয়ে পড়েছিল তা একেবারেই বুঝতে পারেননি তাঁদের পরিবারের কেউই। আত্মঘাতী ছাত্রীর মা মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি কেবল একটা কথাই বলতে থাকেন, “আমার জন্যই চিরকালের মতো মেয়েটাকে হারালাম।” এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.