অরূপ বসাক, মালবাজার: এনআরসি আতঙ্কে ফের আত্মহত্যা। এবার মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী মালবাজারের রাজাডাঙার উত্তর বারোঘোরিয়া। বুধবার সকালে নিম গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। দেহের কাছ থেকে তাঁর ভোটার এবং আধার কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দেবারু মহম্মদ নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই ব্যক্তি মালবাজারের রাজাডাঙার উত্তর বারোঘরিয়ার বাসিন্দা। পেশায় কৃষিজীবী। স্ত্রী এবং তিনটি ছোট মেয়ে রয়েছে দেবারুর। তাঁর পরিবারের দাবি, দিনকয়েক ধরে দেবারু এনআরসি আতঙ্কে ভুগছিলেন। বিভিন্ন পরিচয়পত্র জোগাড় করছিলেন তিনি। তবে তাঁর আধার এবং ভোটার কার্ডের মধ্যে তথ্য মিলছিল না। দু’টি বৈধ পরিচয়পত্রের মধ্যে তথ্যে ফারাককে কীভাবে ঠিক করবেন, তা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন দেবারু। এনআরসি হলে কি তাঁকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে? ডিটেনশন ক্যাম্পে গিয়ে দিন কাটাতে হবে তাঁকে? এমনই নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে দেবারুর মনে। পরিজনদের দাবি, আশঙ্কায় খাওয়াদাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন ওই কৃষিজীবী।
দেবারুর স্ত্রী আনজু বেগম বলেন, “মঙ্গলবার বিকেলে বাজারে যান দেবারু। তবে তারপর থেকে আর তার কোনও খোঁজ পাচ্ছিলাম না। রাতেও বাড়ি ফেরেননি আমার স্বামী। রাতে অনেকে খুঁজি ওকে। কিন্তু পাইনি। বুধবার সকালে নদীর ধারে নিম গাছে তাঁকে ঝুলতে দেখেন স্থানীয়রা। তখনই জানতে পারি ও আত্মহত্যা করেছে।” খবর পৌঁছয় ক্রান্তি পুলিশ ফাঁড়িতে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
[আরও পড়ুন: অন্য নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রেমিক, বাইকে আগুন ক্ষিপ্ত প্রেমিকার]
মালবাজারের বিধায়ক বুলুচিক বড়াইক বলেন, “এনআরসি আতঙ্কেই আত্মহত্যা করেছেন ওই ব্যক্তি। এর জন্য দায়ী বিজেপি সরকার। বিজেপি মানুষের মধ্যে এনআরসি আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনই এনআরসি হতে দেবে না এই রাজ্যে। তাই বারবার বলছি আতঙ্কিত হবেন না।” এ প্রসঙ্গে মাল মহকুমা শাসক দেবাশিষ চক্রবর্তী বলেন, “ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে দেবারুর দেহ। এনআরসি নাকি অন্য কোনও কারণে আত্মহত্যা করেছেন ওই ব্যক্তি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”