ছবি : প্রতীকী
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরের (Durgapur) লাউদোহায় বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। রাজনৈতিক কারণ নয়, সম্পত্তির ভাগ যাতে দিতে না হয় সেই কারণে মা ও দাদা-ই সুপারি কিলার দিয়ে খুন করিয়েছে ওই যুবককে! বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি মাসের ৮ তারিখ। ওইদিনই পারুলিয়ার বাসিন্দা বছর তিরিশের স্বরূপ সৌয়ের দেহ মেলে লাউদোহার মাধাইগঞ্জ এলাকায়। স্বাভাবিকভাবেই ঘটনায় রাজনীতির রং লাগে। তৃণমূল খুনের ঘটনায় জড়িত এই অভিযোগে বিজেপি সর্মথকরা পরেরদিন দুর্গাপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্ণণ ঘড়ুই, বিজেপির রাজ্য নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Raju Banerjee)। খুনের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা। যদিও প্রথম থেকেই বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করা হয় তৃণমূলের তরফে।
ঘটনার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। জানতে পারে, ঘটনার দু’দিন আগে মৃতের মা সুলোচনা দেবী বিজেপি কর্মী সুদয় মাহাতোকে দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীর হাতে এক লক্ষ টাকা দিয়ে আসেন। সেই টাকা সুদয় দেয় লাউদোহার কালীনগর নিবাসী ভাড়াটে খুনি ইব্রাহিম শেখকে। উদ্দেশ্য স্বরূপকে খুন। টাকা হাতে পেয়ে নির্দেশ মতো অপারেশন সারে ইব্রাহিম। কিন্তু কেন ছেলেকে খুন? প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অত্যধিক মদ্যপানের কারণে ক্রমেই পরিবারের বোঝা হয়ে উঠেছিল স্বরুপ। সম্পত্তির ভাগ নিয়ে সিভিক পুলিশ কর্মী দাদা অরুপ মাহাতোর সঙ্গে বিরোধও চলছিল তাঁর। তাই স্বরুপকে সরাতে স্থানীয় বিজেপি কর্মী সুদয় মাহাতোর সাহায্য নেয় মা ও দাদা। যদিও এই ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সুলোচনা দেবী। তার কথায়, “খুন করার জন্য নয়, টাকাটা সুদয়কে ধার হিসেবে দিয়েছিলাম। তবে সুদয় ছেলেকে খুন করতে পারে তা বুঝিনি।”
তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম দিন থেকেই মৃতের পরিবারের লোকজনের কথায় অসঙ্গতি ছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই বিজেপি কর্মী সুদয় আর দুষ্কৃতী ইব্রাহিমের কথা জানা যায়। ধৃতদের জেরা করে খুনের ব্যাপারে ইতিমধ্যে বেশ কিছু তথ্য জানা গিয়েছে। আরও জেরার প্রয়োজন রয়েছে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি (১)পূর্ব অভিষেক গুপ্তা জানান, ” মা ছেলেকে মারতে ভাড়াটে খুনির সাহায্য নিয়েছিলেন। পরিকল্পনা করেছিলেন সুদয় মাহাতো। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে।” বুধবার ধৃতদের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে সুদয় মাহাতোকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত এই ঘটনায় বিজেপি কর্মী যোগ প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘড়ুই বলেন, “পুলিশ ও তৃণমূলের চক্রান্তে ফাঁসানো হয়েছে আমাদের কর্মীকে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.