ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও রঞ্জন মহাপাত্র: মারিশদার ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে জলকষ্টে ভুগছে বহু পরিবার। বারবার স্থানীয় নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেই দাবি গ্রামবাসীদের। স্থানীয়দের সঙ্গে জনসংযোগের পর মারিশদার পাঁচ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিকে অবিলম্বে ইস্তফার নির্দেশ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
কাঁথিতে সভা করতে যাওয়ার পথে শনিবার মারিশদায় গাড়ি থেকে নেমে জনসংযোগ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জনতার সঙ্গে মিশে তাঁদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে অভাব-অভিযোগের কথা মন দিয়ে শোনেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেকথা সকলের উদ্দেশে অভিষেক সেই কথোপকথনের প্রসঙ্গ তোলেন। অভিষেক জানান, “আমি কাউকে না বলে একটা গ্রামে গেলাম। গ্রামের ভিতরে গিয়ে দেখলাম অনেকগুলো তফশিলি জাতি, উপজাতিভুক্ত পরিবারের সদস্যরা সেখানে থাকেন। বলছে বৃষ্টি হলে এক কোমর জল জমে এলাকায়। প্রধান, উপপ্রধানকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বললাম রেশনের চাল পাচ্ছেন? বললেন, চাল পাচ্ছি। জল পাচ্ছি না। কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে গেলাম। কী করুণ অবস্থা। তাঁরা এমন কিছু তো চাইছে না, যা তাঁদের চাওয়ার অধিকার নেই। বললাম যাঁরা লাল আলো লাগানো গাড়ি হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়ায় তাঁদের বলেননি কেন? ওঁরা বললেন, তাঁরা কখনও আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকায়নি। আপনিও একমাত্র এখানে আসলেন।”
গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পর গাড়িতে উঠে কাঁথির সভাস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন অভিষেক। গাড়িতে বসে মারিশদার ৫ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতি কে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন তৃণমূল সাংসদ। এরপর কাঁথির সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রমাকৃষ্ণ মণ্ডল এবং অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে ইস্তফার নির্দেশ দেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফাপত্র জমা না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে ক্ষোভ, বিক্ষোভ জানাবে অথচ দেখবে না। কার কথায় পঞ্চায়েত চলছে? তৃণমূলের চিহ্নে জিতব আর বিজেপির দালালি করব? যারা এসব ভাবছেন তাদের সকলের তালিকা আমার কাছে আছে। তাদের মেরুদণ্ড কোথায় রাখা আছে আমি জানি। মানুষের কাজ না হলে আমাদের রাজনীতি করে লাভ নেই।”
জনপ্রতিনিধিদের জনসংযোগে জোর দেওয়ার পরামর্শ অভিষেকের। তাঁর কথায়, “যার নেতৃত্বে দল করি সেই মমতা যদি গ্রামে যেতে পারেন তাহলে আমরা কেন যাব না? ১০টা করে গ্রামে যান। দরকার হলে রাতে গিয়ে থাকুন। মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনুন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.