Advertisement
Advertisement

অভিনব উদ্যোগ নবীনদের, ভুলে যাওয়া জামাই আদর ফিরে পেলেন প্রবীণরা

শুরবাড়ির গ্রামে এই সম্মান পেয়ে আপ্লুত জামাইরা।

Aged son-in-laws are felicitated
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:December 4, 2018 6:30 pm
  • Updated:December 4, 2018 6:30 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: কয়েক যুগ আগে বিয়ে হয়েছিল। শ্বশুর-শাশুড়ি কবেই দেহ রেখেছেন। আজ তাঁরা নিজেরাই দাদু হয়ে গিয়েছেন। অনেকের নাতি নাতনিরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সেই কবে যে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছেন তা অনেকেরই মনে পড়ে না। তবে মাঝেমধ্যে মনের ঘরে উঁকি দেয় শ্বশুরবাড়ির সেই জামাই আদরের মধুর স্মৃতি। সেই স্মৃতি নিয়েই নাড়াচাড়া করে সময় কাটে। অতীতের জামাই আদর যে ফিরে পাবেন কখনও তা কল্পনাও করতে পারেননি অশীতিপর মোহন ঘোষ, সত্তরোর্ধ নিখিল ঘোষরা। শ্বশুরবাড়ির ভুলে যাওয়া সেই পুরনো দিনের জামাই আদরই পেলেন তাঁরা। প্রবীণদের ডেকে রীতিমতো সংবর্ধনা দিলেন গ্রামের যুবকরা।

[চিকিৎসার নামে কাউকে টাকা দেবেন না, কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]

কেতুগ্রামের ছোটখেঁয়াই গ্রামের এই অভিনব উদ্যোগ এলাকায় সাড়া ফেলেছে। মঙ্গলবার এই গ্রামে ১৩০ জন জামাইকে আনুষ্ঠিকভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হল। কপালে ফোঁটা, হাতে পুষ্পস্তবক ও সঙ্গে কিছু উপহার দিয়ে গ্রামের ’শ্যালক শ্যালিকা’রা তাঁদের বিনয়ের সঙ্গে বললেন “আবার আসবেন জামাইবাবু। শ্বশুর-শাশুড়ি থাক বা নাই থাক, আমরা তো রয়েছি।” শ্বশুরবাড়ির গ্রামে এই সম্মান পেয়ে আপ্লুত জামাইরাও।

Advertisement

কেতুগ্রামের বিল্লেশ্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোটখেঁয়াই গ্রামে মেরেকেটে ১১০ পরিবারের বসবাস। অধিকাংশই কৃষক। অনেকে জনমজুরি করেন। কিন্তু পরস্পরের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক। ছোটখেঁয়াই গ্রাম যেন এক যৌথ পরিবার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকবছর ধরে এই গ্রামের যুবকরা নিয়েছেন এক অভিনব উদ্যোগ। বিঘা দশেক জমি তাঁরা কৃষকদের থেকে ভাগ চুক্তিতে নিয়ে ধানচাষ করেন। গ্রামবাসী শরত পাল, সুভাষ মাঝিরা বলেন, ”আমরা নিজেরাই শ্রম দিয়ে ধানচাষ করি। জৈব সার ব্যবহার করা হয়। যা লাভ হয় তার সম্পূর্ণ গ্রামের উন্নয়নে কাজে লাগানো হয়। দুঃস্থদের সাহায্য করা হয়।” স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বছর ধানচাষ করে লাভ হয়েছিল ৭০ হাজার টাকা। এবছরে ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।

Advertisement

এদিন গ্রামে ছিল রক্ষাকালীপুজো। গ্রামে এমনিতেই প্রচুর কুটুম এসেছেন। গ্রাম্যকমিটি থেকে ধানচাষের লাভ থেকে এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ১০০ জন দুঃস্থকে কম্বল দেওয়া হয়। ১০০ জনকে দেওয়া হয় মশারি। ৫০ জনকে কম্বল দেওয়া হয়। তার সঙ্গে দরিদ্র পরিবারের ১০ জন কৃতি ছাত্রছাত্রীর হাতে ৫০০ টাকা করে সাহায্য তুলে দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানেই ১৩০ জন বৃদ্ধ জামাইকে সংবর্ধনা দেন নবীনরা। ৮৫ বছরের মোহনবাবু, ৭৫ বছরের নিখিলবাবুরা বলেন, ”এই অনুষ্ঠানে আমাদের শ্বশুর শাশুড়ির কথা মনে পড়ছে। একটা দিন এত সুন্দর কাটতে পারে ভাবিনি।”

ছবি: জয়ন্ত দাস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ