Advertisement
Advertisement
Air Force

মৃত্যুর পর কী চান? ইচ্ছাপত্র প্রকাশ ৬৫’র নায়ক তিন পাক বিমান ধ্বংসকারী যোদ্ধার

কী জানালেন অ্যালফ্রেড কুক?

Air Force pilot express desire about his mortal remains | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:October 9, 2023 11:46 am
  • Updated:October 9, 2023 1:06 pm

অর্ণব আইচ: “আমার মৃত্যুর পর দেহাবশেষ যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয় কলাইকুণ্ডার আকাশে। সেই দেহাবশেষের কণা যেন ভাসতে ভাসতে এসে পড়ে মেদিনীপুরে কলাইকুণ্ডার রানওয়েতে। কলাইকুণ্ডায় যেন আমি থাকতে পারি অনন্তকাল।” ৫৮ বছর পর কলাইকুণ্ডার মাটিতে ফিরে যুদ্ধবিমানের দিকে চেয়ে চোখে জল ৮৩ বছরের বৃদ্ধ ফ্লাইট লেফটেন‌্যান্ট অ‌্যালফ্রেড কুকের। জানালেন তাঁর শেষ ইচ্ছা।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে এই বায়ুসেনা ছাউনি কলাইকুণ্ডার আকাশেই ভারতীয় যোদ্ধা পাইলট অ‌্যালফ্রেড কুক তাঁর ‘হান্টার’ যুদ্ধবিমান নিয়ে তাড়া করে ছিলেন পাকিস্তানের তিনটি যুদ্ধবিমানকে। নিজের বিমান থেকে অস্ত্র প্রয়োগ করে একাই ধ্বংস করেছিলেন তিনটি যুদ্ধবিমান। চতুর্থটি তাঁরই এক সতীর্থ তাড়া করে পাঠিয়ে দিয়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দিকে। আর সেদিন বায়ুসেনার ওই যোদ্ধা এই যুদ্ধ জয় করেছিলেন বলেই হয়তো সেদিন বেঁচে গিয়েছিল বারাকপুর বায়ুসেনা ছাউনি ও দমদম বিমানবন্দর। ৫৮ বছর পর কলাইকুণ্ডার আকাশে অ‌্যালফ্রেড কুকের সামনেই সেই ‘বুনোহাঁসের তাড়া’র পুনরাভিনয় করে দেখালেন বায়ুসেনার তরুণ যোদ্ধারা। এই পুনরাভিনয় দেখতেই অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি কলাইকুণ্ডায় এসে উপস্থিত হন কুক। সঙ্গে মেয়ে মিশেল কুক, যাঁর জন্ম হয়েছিল কলাইকুণ্ডারই সেনা হাসপাতালে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাসপাতালে জাল নোট জমা দিয়ে ধৃত বাংলাদেশি! পুলিশের নজরে মুদ্রা বিনিময়কারী]

এখনও সবকিছু মনে আছে কুকের। ১৯৬৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ভোরের আলো ফুটতেই ৬টি পাক যুদ্ধবিমান এফ-৮৬ সেবারের হামলায় ধ্বংস হয় কলাইকুণ্ডায় রাখা ৬টি যুদ্ধবিমান। এর মধ্যে চারটি ‘ভ‌্যাম্পায়ার’ ও দু’টি ‘ক‌্যানবেরা’। জয়ের আনন্দে ফের সকাল দশটা নাগাদ পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশের তেজগাঁও থেকে ফের উড়ে আসে চারটি পাক বিমান। এবার তাদের লক্ষ‌্য ছিল বারাকপুর ও দমদম। সেদিন সকালে আর প্রাতরাশ করার সময় পাননি ১৪ স্কোয়াড্রনের যুদ্ধবিমান পাইলট কুক। তিনি তাঁর ‘হান্টার’ যুদ্ধবিমান নিয়ে কলাইকুণ্ডা থেকে উড়ে যেতেই চারটি পাক বিমান আসার খবর পান। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক‌্যানিং থেকে ‘বুনোহাঁসের তাড়া’ করে আসেন কলাইকুণ্ডার আকাশে। ২০ হাজার ফুট উপরে চলতে থাকে ভারত ও পাক যুদ্ধবিমানের ‘ডগ ফাইটিং’। কয়েক ঘণ্টা আগের ৬ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের জবাব দিতে পরপর দুই পাক যুদ্ধবিমানের দিকে গুলি চালাতে থাকেন তিনি। পাকিস্তানের দু’টি বিমান ধ্বংস হয় কলাইকুণ্ডার আকাশেই।

Advertisement

তৃতীয় পাক বিমানের দিকে গুলি চালাতে চালাতে তাঁর গুলি শেষও হয়ে যায়। সেটি যশোরের কাছে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে। জয়ী হয়ে কলাইকুণ্ডার রানওয়ের মাটি স্পর্শ করে কুকের হান্টারের চাকা। তাই অ‌্যালফ্রেড কুক জানান, তিনি বায়ুসেনা তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর পর যেন দেহাবশেষের ৫০ শতাংশ ছড়িয়ে দেওয়া হয় আম্বালার বায়ুসেনা ছাউনির আকাশে। এখানেই ১৪ স্কোয়াড্রনের ঘাঁটি। বাকি দেহাবশেষ যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয় কলাইকুণ্ডার আকাশে। এখানকার বাতাসেই ধুলোকণার সঙ্গে মিশে যাবে তাঁর দেহাবশেষ, যেখানে চিরকাল বেঁচে থাকবে তাঁর সত্ত্বা।

[আরও পড়ুন: ‘ভোর ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আছি’, কলকাতায় ফিরে তৃণমূলকে ‘আহ্বান’ রাজ্যপালের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ