ফাইল ছবি
রাহুল চক্রবর্তী: ভাগ্যের চাকাটা তো ঘুরছে, ভাগ্যের চাকাটা তো ঘুরবে – কালজয়ী গানটির প্রথম এই দু’টি লাইন রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জনতার রায় কোনও দলকে ক্ষমতার সিংহাসন থেকে নামিয়ে দেয়। আবার বিপুল আস্থায় কোনও দলকে নিয়ে আসে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে। কে জানত বুদ্ধবাবুর ‘আমরা ২৩৫’ দম্ভকে পর্যুদস্ত করে লাল পার্টিকে ছিন্নমূলে পাঠাবেন মমতা। কার ধারণা ছিল যে, এ বাংলাতেও চাষ শুরু করে দেবে পদ্ম? সব মিলিয়ে অধিকাংশ রাজনীতির কারবারিদের কাছে ভাগ্য বা ভবিষ্যতের গুরুত্ব অপরিসীম। ইংরেজি নতুন বছরটা কেমন যাবে, তার আঁচ পেতে সাধারণ মানুষের মতো তাঁরাও উদগ্রীব। পঞ্জিকা, জোতিষী কিছুই বাদ নেই। ভাগ্যচক্রে বছরটা তৃণমূলের, বলছে পঞ্জিকা। তবে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপির উত্থান-পতন নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন। দ্বিতীয় স্থানাধিকার নিয়ে পঞ্জিকা মতও আবার ভিন্ন।
কীরকম?
গুপ্তপ্রেস, বেণীমাধব শীল, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত তিন পঞ্জিকা দপ্তরই মনে করছে, ইংরেজি ২০১৮ সালটা তৃণমূলের। রাজ্যের শাসক দলের প্রভাব, প্রতিপত্তি থাকবে বছরভর। তৃণমূলের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। বেণীমাধব শীল বলছে, বাংলা সন ১৪২৪ চলছে। তা ইংরেজি ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর আছে। তাতে আগামী সাড়ে চার মাসে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গ্রামাঞ্চলে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, বিদ্যালয়, নারীশিক্ষার প্রভূত উন্নতি ঘটবে। পার্বত্য অঞ্চলেও এই কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষাক্ষেত্র, কৃষিকাজে আমূল পরিবর্তন ঘটতে চলেছে।
আবার গুপ্তপ্রেস বলছে, নববর্ষ থেকে বাংলা নতুন ক্যালেন্ডার কার্যকর হয়। তাতে এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, যারা যেরকম আছে, তারা সেরকমই থাকবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এ বছর খুব একটা পরিবর্তন হবে না। এক নম্বরে রাজ্যের শাসক দলের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। দু’নম্বর জায়গাটা দেশের একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলকে ছেড়ে দিতে হবে বলে জানাচ্ছে এই পঞ্জিকা। তারা এও মনে করছে, রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল তৃতীয় স্থানে আসবে কি না, তা বলা শক্ত। তাদের যে নিজস্ব জায়গাটা ছিল, তা তারা কায়েম রাখতে পারবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। কংগ্রেস, সিপিএমের মধ্যে কোনও দলের তৃতীয় স্থানে থাকার সম্ভাবনা দেখছে এই পঞ্জিকা।
আর একটি পঞ্জিকা দপ্তর মনে করছে, রাজ্যে যারা রয়েছে, তারাই বহাল থাকবে খুব ভালভাবে। বর্তমানে দেশের সরকার চালানো রাজনৈতিক দলের পশ্চিমবঙ্গে খুব একটা আশা দেখছে না তারা। বরং বিজেপিকে তারা সবার শেষেই রাখছে। সিপিএমের একটু উঠে আসার সম্ভাবনা দেখছেন ওই পঞ্জিকার পণ্ডিতরা। তবে কোনও পঞ্জিকা ইংরেজি সন নিয়ে কাজ করে না। বাংলা সনে তারা নববর্ষের আগে পর্যন্ত তৃণমূলের জয়ের পথে কোনও কাঁটাই দেখছে না। এও মনে করছে, বছরের শুরুটা যার ভাল হয়, শেষটাও তা অব্যাহত থাকার বিলক্ষণ সম্ভাবনা। বলার অপেক্ষা রাখে না জ্যোতিষ, ভবিষ্যদ্বাণী এমনকী এক্সিট পোল বহুক্ষেত্রে মেলেনি। সেই অঙ্কে আনকোরা প্রার্থীরও ধূমকেতুর মতো উত্থান হয় রাজনৈতিক ময়দানে। আবার অভাবনীয় পতনও ঘটে কোনও দলের। কারণ, ভাগ্যের পথটা যে বক্র, তাই তার নাম ভাগ্যচক্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.