Advertisement
Advertisement

রাজ্য জুড়ে জাল ছড়িয়েছে প্রায় ৫৫০ ভুয়ো ডাক্তার, চিহ্নিত ১৪ জন

নবান্নে বিস্ফোরক রিপোর্ট জমা দিল সিআইডি৷ অভিযুক্ত নামী দুই হাসপাতালও৷

Around 550 fake doctors operating in West Bengal, says CID report
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 1, 2017 10:03 am
  • Updated:June 1, 2017 10:03 am

স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্য জুড়ে জাল ছড়িয়েছে সাড়ে পাঁচশো ভুয়ো ডাক্তার৷ অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর এই তদন্ত রিপোর্ট নবান্নে জমা দিল সিআইডি! পাঁচ পাতার ওই রিপোর্টে সিআইডি জানিয়েছে, এই সাড়ে পাঁচশো ভুয়া ডাক্তারের মধ্যে ১৪ জনকে তারা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে দু’জন আবার খাস কলকাতাতেই বাইপাসের ধারে দু’টি হাসপাতালে চিকিৎসারত৷ নবান্ন সূত্রে খবর, রিপোর্ট পেয়েই কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য প্রশাসন৷ জানা গিয়েছে, যাদের চিহ্নিত করা গিয়েছে তাদের উপর নজরদারিও শুরু হয়ে গিয়েছে৷ রিপোর্টের কথা কানে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও৷

একেবারে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এই ঘটনাটিকে গর্হিত অপরাধের তালিকায় রেখে দেখা হচ্ছে৷ মানুষের প্রাণ নিয়ে কোনওরকম আপস যে তিনি করবেন না, তা ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন৷ এর পরও কীভাবে কলকাতার বুকে ভুয়ো চিকিৎসকরা মানুষের প্রাণ নিয়ে খেলছে? তার ভিত্তি কী? এর পিছনে কোন কোন চক্র সক্রিয়? সবটাই এখন প্রশাসনের নজরবন্দি৷ একে একে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় লিখিত অভিযোগও জানানো হচ্ছে৷ স্রেফ চূড়ান্ত সময়ের অপেক্ষা৷ মনে করা হচ্ছে, নবান্নের চূড়ান্ত নির্দেশ পেলেই একেবারে চরম কামড়ে সেই ভুয়ো চিকিৎসকদের পাকড়াও করা হবে৷

Advertisement

[‘ব্রহ্মচারী’ ময়ূরের অশ্রুতেই গর্ভবতী হয় ময়ূরী, বিচারপতির মন্তব্যে বিতর্ক]

Advertisement

ভুয়ো ডাক্তারদের খোঁজ করতে গিয়ে দু’জন ডাক্তার এর মধ্যেই সিআইডির জালে ধরা পড়েছে৷ বেশ নামী বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিল তারা৷ কেউ ইউনানি চিকিৎসার নাম করে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে যুক্ত রয়েছে৷ কেউ প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছে অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন ভাঁড়িয়ে৷ কীভাবে তা সম্ভব হচ্ছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট জমা পড়েছে বলেই খবর৷ এরই সূত্র বিধানসভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, “সিআইডির রিপোর্ট আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করছি৷ রিপোর্ট পেলেই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷” সরকার সেই পথেই এগোচ্ছে বলে সূত্রে খবর৷

এর মধ্যে হাওড়ার ব্যাঁটরায় আরও এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে৷ অভিযোগ, অয়ন ঘোষ নামে এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করছিল শুভেন্দু ভট্টাচার্য নামে এক চিকিৎসক৷ ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, শুভেন্দু ভট্টাচার্য হাওড়ার ‘কল্পনা ওমেন অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার’ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করছিল৷ অবাক করা কাণ্ড হল, তার নামে যে অভিযোগ জমা পড়েছে তা জানার পরও চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিল এই ‘ভুয়ো’ চিকিৎসক৷ সিআইডি যে এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সেই খবরও সে পেয়ে যায়৷ তার পর থেকে পলাতক শুভেন্দু৷ নিজের রোগীদের তিনি আচমকা ছুটিও দিয়ে দিয়েছে৷ এখানেই আরও খটকা লাগে গোয়েন্দাদের৷ তাঁরা মনে করছেন, এর পিছনে অবশ্যই কোনও বড় ব়্যাকেট রয়েছে৷ আর তার সঙ্গে কিছুটা হলেও যোগসূত্র রয়েছে পুলিশের৷ তা না হলে পুলিশে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার এবং তদন্ত শুরু হওয়ার খবর তিনি পান কীভাবে? পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

[কেন্দ্রের গবাদি পশু নির্দেশিকা নিয়ে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি রাজ্যের]

এরই মধ্যে অভিযুক্ত ডাক্তাররা যে যে হাসপাতালে কর্মরত ছিল, সেখানে কীভাবে তারা এতদিন কাজ করেছে তা নিয়েও পৃথক তদন্ত চলছে৷ অভিযুক্তরা যাতে রাজ্যের বাইরে পালিয়ে যেতে না পারে তার জন্য কড়া নজরদারিও রয়েছে৷ অপেক্ষা শুধু নবান্নের চূড়ান্ত নির্দেশের৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ