চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ১৮ বছর মানেই সাবালক। ১৮ মানেই ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা, আইনি স্বীকৃতির প্রথম ধাপ। তাই ১৮-র জন্মদিন শুধু বার্থ ডে সেলিব্রেশনে আটকে না থেকে ব্যতিক্রমী জন্মদিন পালন করলেন অনিমেষ। আসানসোলের অনিমেষ বর্মা। রবিবার ছিল জন্মদিন। ১৭ পেরিয়ে ১৮ হতেই অনিমেষ রক্তদান করে এলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে। অনিমেষ সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা নবীন বর্মাকে। ছেলের কাণ্ড দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনিও রক্তদান করলেন।
বার্নপুর রিভারসাইডের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র অনিমেষ। স্থানীয় কুমারপুরের এক বহুতলে দীর্ঘদিনের বাসিন্দা তাঁরা। প্রতিবছর জন্মদিনে বাড়ির নিচে একটি করে গাছের চারা লাগায়। আর মায়ের হাতের তৈরি রান্না খাওয়ায় দুঃস্থ শিশুদের। সেই অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা এবারেও রয়েছে। তবে বাড়তি সংযোজন রক্তদান। বাবা নবীন বর্মা জানান, একমাত্র ছেলের জন্মদিন শুধু কেক-পায়েসের সাহচর্যে আত্মীয়পরিজনকে নিয়ে কাটানো নয়। মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদে নিজের ছেলের জন্মদিনটাকেই বেছে নিই। ছেলেই প্রথম রক্ত দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। নাবালক হওয়ায় এই মহৎ কাজের অংশীদার হতে পারেনি। ইচ্ছেটা বুকে জমিয়ে রেখেছিল। রবিবার সেই সুযোগ আসে।
মা সীমা বর্মা জানান, সোমবার তিনিও রক্তদান করবেন। অনিমেষ বলেন, আসানসোলের রক্তদান আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত প্রবীর ধর। তাঁর অনুপ্রেরণায় রক্তদান করেছি। মনে বেশ আনন্দ লাগছে। এবার থেকে বন্ধুদেরও এই কাজে উৎসাহিত করব। তারাও যেন এই কাজে এগিয়ে আসে।
এই প্রসঙ্গে প্রবীর ধর বলেন, “সাধারণ মানুষকে এক ইউনিট রক্তের জন্য হয়রানির শিকার হতে দেখেছি। এলাকার অসংখ্য সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানান সমস্যায় পড়তে দেখেছি। এই ঘটনাগুলো আমাকে খুব নাড়া দেয়। তাই অনিমেষ জন্মদিনটাকেই এই কাজের জন্য বেছে নেওয়ায় আমি খুব খুশি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.