সাবির জামান, লালবাগ: প্রায় সারা জীবনের সঞ্চয় নিয়ে ব্যাংকে রেখেছিলেন। আশা ছিল প্রয়োজনমতো টাকা তুলে কাজে লাগাবেন। এটিএম থেকে টাকা তুলতে গণ্ডগোল হতে পারে তার জন্য ব্যাংকের ম্যানেজারের সাহায্য চেয়েছিলেন। সাহায্য দূরের কথা ব্যাংককর্মীদের অসহযোগিতায় এখন সর্বস্ব খুইয়েছেন এক শ্রমিক। এমনই অভিযোগ মুর্শিদাবাদের মইদুল ইসলামের।
[ঘুমের ‘কোটা’ পূর্ণ হয়নি চালকের, চার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ল ট্রেন]
তিনি পড়াশোনা তেমন জানেন না। এই অজ্ঞতার সুযোগে পা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক। বিচারের আশায় তিনি ছুটছেন কখনও পুলিশের কাছে, তো কখনও ব্যাংকে। পুলিশ সাহায্যের হাত বাড়ালেও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতির জন্য ব্যাংক কর্মীদের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন মহিদুল। এই বিষয়ে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার কমলেশ বন্দোপাধ্যায়কে তাঁর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে, তিনি ফোন ধরেননি। ফলে ব্যাংক কর্তৃপপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
[চালককে কান থেকে ফোন সরাতে বলেছিলাম, একবার যদি কথাটা শুনত!’]
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, রানিতলা থানার বাসিন্দা মফিদুল ইসলাম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। বাইরে থাকার কারণে মহিদুল স্থানীয় ভগবানগোলা থানা এলাকার বাহাদুরপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে গত নভেম্বর মাসের ৬ তারিখে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। ওই দিনই নিয়মমাফিক তিনি ব্যাঙ্ক থেকে এটিএম কার্ড পেয়ে যান। পরবর্তীতে নভেম্বরের ১৩ তারিখে ৬০ হাজার টাকা জমা করেন। এরপর ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে গিয়ে এটিএম কার্ডটি চালুর পদ্ধতি-সহ পিন নম্বর জানতে চান মহিদুল। ব্যাংক ম্যানেজার তাঁকে শাখার নিচে এটিএম কাউন্টারে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীর কাছ থেকে সব কিছু জেনে নিতে বলেন। ওই কর্মী জানিয়ে দেন এটিএমে শুধু মাত্র টাকা জমা করা হয়। তাঁকে ভগবানগোলা রেজেস্ট্রি অফিসের কাছে একটি এটিএমে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে ওই শ্রমিক সেখানেই যান। কিন্তু ওই এটিএমে গিয়ে দেখেন সেখানে কোনও সিকিউরিটি নেই। তাই বাধ্য হয়ে উপস্থিত যুবকের পরামর্শ মোতাবেক তিনি এটিএমের পিন নম্বর ও ব্যাবহার বিধি শিখে নিতে যান। ওই ফাঁকে এক প্রতারক তাঁর এটিএম কার্ডটি বদল করে নেয়। এর বদলে মহিদুলের হাতে ঝুমা হালদার নামের এক গ্রাহকের এটিএম কার্ড ধরিয়ে দেন। তারপর মহিদুল বাড়ির পথে রওনা দেওয়ার সময় মোবাইলে ম্যাসেজে দেখেন তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০ হাজার টাকা উঠে গিয়েছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ওই শ্রমিক ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হয়ে তাঁর অ্যাকাউন্ট লক করতে ম্যানেজারকে অনুরোধ করেন। কিন্তু ম্যানেজের তাকে লিখিত দিতে বলেন এই সময়ের মধ্যেই বাকি ২২ হাজার ৫০০ টাকা একইভাবে উঠে যায়। এই ঘটনাই ব্যাংকের গাফিলতি এবং ব্যাংকের যোগসাজশের কথা উল্ল্যেখ করে ভগবানগোলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মহিদুল। এই বিষয়ে ভগবানগোলা থানার ও সি উৎপল কুমার পাল বলেন, “ ব্যাংক বেশ কিছুদিন আগে সিসিটিভি-র একটি ফুটেজ দিয়েছিল । আমরা ফের বাকি ফুটেজ চেয়েছি ।” এদিকে মহিদুলের দাবি , “যে সময়ে এই ঘটনা ঘটে তার পরের ফুটেজ ব্যাংক দেওয়ায় পুলিশ ঠিক মতো তদন্তের কাজ করতে পারছে না । আমি ঘটনার সঠিক বিচার চাই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.