প্রতীকী ছবি।
সুবীর দাস, কল্যাণী: চিকিৎসার গাফিলতিতে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ। নদিয়ার কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে তুমুল উত্তেজনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কল্যাণী থানার পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার মাথা যন্ত্রণা এবং বমি নিয়ে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই শিশুকে। শুরু হয় চিকিৎসা। চিকিৎসকরা সিটি স্ক্যান করাতে বলেন। সেই মতো বুধবার সিটি স্ক্যান করা হয়। রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা বলেন, “শিশুর মাথায় জল জমেছে। একটি এমআরআই করতে হবে। অভিযোগ, সিনিয়র চিকিৎসক বলেন এখন শিশুর অবস্থা আগের থেকে ভালো। তবে আরও একটু সুস্থ হোক তারপর সিটি স্ক্যান করতে হবে।” সেইমতো পরিবারের সদস্যরা সিটি স্ক্যান বিভাগে কথা বলতে যান। তাঁরা রিপোর্ট দেখে একই কথা বলেন। শিশুর যা পরিস্থিতি তাতে সিটি স্ক্যান করা যাবে না, তাতে বিপদ ঘটতে পারে, কারণ সিটি স্ক্যানের জন্য তাকে অজ্ঞান করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, শুক্রবার রাতে ওই বিভাগের জুনিয়র চিকিৎসক এবং নার্সেরা সিটি স্ক্যানের জন্য পরিবারের সদস্যদের চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। আরও অভিযোগ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। বলা হয়, সিটি স্ক্যান না করলে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হবে ওই শিশুকে।
মাঝরাতে বারবার চাপের মুখে পড়ে নতিস্বীকার করেন শিশুর পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, তাঁদেরকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয় সিটি স্ক্যানের জন্য। এরপর ওই শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় সিটি স্ক্যান বিভাগে। সিটি স্ক্যান নিয়ে যাওয়ার সময় একটি স্ট্রেচারও দেওয়া হয়নি শিশুকে। সিটি স্ক্যান বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর জুনিয়র চিকিৎসক শিশুকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে ভ্যাকসিন দেন। তারপর থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি শিশুর। সিটি স্ক্যান করে শিশুকে দেওয়া হয় শিশু বিভাগের বেডে। সেখানে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকে শিশুটি। দেওয়া হয় অক্সিজেন ও স্যালাইন। পরিবারের দাবি, স্যালাইন টানছিল না শিশু। ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায় কিন্তু শিশুর জ্ঞান ফেরেনি। শনিবার সকালে চিকিৎসকরা শিশুর পরিবারকে জানান তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরই হাসপাতাল চত্বরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কল্যাণী থানার পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দেয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.