ছবি: প্রতীকী
রাজা দাস, বালুরঘাট: নেট ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে শ্রমিকের ১০০ দিনের কাজের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অভিযোগ উঠল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী সদস্য তথা সচিবের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই সচিবের বিরুদ্ধে বিডিওর কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে বিষয়টি জানাতে গিয়ে প্রধানের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে ওই অভিযোগকারী শ্রমিককে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি তিন নম্বর ধলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁপাহাট এলাকায়।
জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগে আগেই সংশ্লিষ্ট সংসদে ১০০ দিনের কাজ হয়। এরপর চারমাস কেটে গেলেও প্রাপ্য টাকা পাননি জব কার্ডের আওতায় থাকা শ্রমিক সীতেন্দ্রনাথ সরকার। ব্যাংক থেকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে বারবার যোগাযোগ করেও লাভ হয়নি। এরমধ্যেই শ্রমিক সীতেন্দ্রনাথ সরকার বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য তথা সচিব সাইদুল রহমান মণ্ডলের বিরুদ্ধে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ আনেন। অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই সচিব দিন কয়েক আগে তার মোবাইলটি চান। ওই মোবাইল থেকে সচিব নিজের মোবাইলে এয়ারটেল পেমেন্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলেন। কিছু পরে মোবাইলটি সীতেন্দ্রনাথকে ফেরত দিয়ে জানান, রাতের মধ্যে টাকা ঢুকে যাবে। তবে রাতে বেশ কয়েকটি ম্যাসেজ ঢোকে ওই শ্রমিকের মোবাইলে। পরদিন ম্যাসেজগুলি ব্যাংকে দেখালে জানতে পারেন, অ্যাকাউন্টটি থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। সাতবারে সেই তোলা টাকার পরিমাণ ২৯২০, ১০০০, ১০০০, ৫০০, ৫০০, ৪০০, ৪০। সইদুল রহমান মণ্ডল ওই টাকা তুলেছে বলেই জানান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার বিচার চেয়ে প্রথমে পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে যান শ্রমিক সীতেন্দ্র নাথ। তবে সেখানে পাগল বলে সম্বোধন করে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলেই দাবি। এরপরই হিলির বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই শ্রমিক।
অভিযোগকারী জানান, ১০০ দিনের কাজে মাটি কেটে ছিলেন মাস চারেক আগে। তবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢোকায় তিনি প্রধানের কাছে যান। প্রধান তাঁকে স্থানীয় মেম্বর তথা সচিবের কাছে যেতে নির্দেশ দেন। সেখানে যেতেই সচিব তার মোবাইলটি নেন। কিছু ঘাঁটাঘাঁটির পর জানান, সন্ধেতে টাকা ঢোকার মেসেজ আসবে। রাতে কয়েকটি মেসেজ আসে তাঁর মোবাইলে। পরদিন ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে নয়, টাকা ঢুকেছে এয়ারটেল পেমেন্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে। তবে সেখান থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার হতেই প্রধানের কাছে যান তিনি। তবে প্রধান তাঁকে পাগল বলে তাড়িয়ে দেন। সুবিচারের আশায়, হিলি বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সীতেন্দ্রনাথবাবু।
এহেন অভিযোগ শুনে সাইদুল রহমান জানিছেন, তাঁর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন সীতেন্দ্রনাথ সরকার। এয়ারটেল পেমেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেই ধার শোধ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যে। ধলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান উজ্জ্বল মণ্ডল জানান, একটি মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। আসলে ঘটনাটা তেমন কিছু না। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। হিলির বিডিও সঞ্জয় সুব্বা জানান, ঘটনাটি শুনেছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.