শুভঙ্কর বসু: শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের জমি দখল করে এদেশে বহাল তবিয়তে বাস করছেন তিন বাংলাদেশি। ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড জাল প্রমাণ হওয়ার পরও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। জেলাশাসক থেকে স্থানীয় থানার পুলিশ, বিষয়টি জানে সকলেই। তাও মুখে কুলুপ সকলেরই। কেউ কিচ্ছুটি বলতে রাজি নন। বিষয়টি নিয়ে আপাতত রাজে্যর রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক।
অভিযোগ, নদিয়ার হাঁসখালি ব্লকে সুষেণ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির জমির কিছু অংশ ও একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের গোটাটাই দখল করে বাস করছেন বিনয় বারুই, পুতুল বারুই ও হরিদাস বারুই। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক, এসডিও ও বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন সুষেণ বিশ্বাস। পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু এব্যাপারে কেউ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ২০১৫ সালে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সুষেণবাবু। সেই মামলায় একটি দল গঠন করে জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। এসডিও, বিডিও, খাদ্য দফতরের এক প্রতিনিধিকে নিয়ে দল তৈরি করে ওই তিন ব্যক্তির সমস্ত পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন বিচারপতি বাগচী। পরিচয়পত্র ভুয়ো প্রমাণিত হলে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন বিচারপতি।
২০১৫-র ১৭ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক ডাকেন জেলাশাসক। এরপর তদন্তে দেখা যায় বিনয় বারুই, পুতুল বারুই ও হরিদাস বারুইয়ের ভোটার আই কার্ড, প্যান কার্ড-সহ যাবতীয় তথ্য ভুয়ো। এছাড়াও জানা গিয়েছে বিনয়, পুতুল ও হরিদাস সকলের নামই রয়েছে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায়। গত নির্বাচনে তাঁরা সেখানে ভোটও দিয়েছেন। এছাড়াও সেদেশে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ নাগরিকত্বের একাধিক প্রমাণ মিলেছে। অভিযোগ, এত কিছুর পরও প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। কোনও রহস্যজনক কারণে চেপে গিয়েছে গোটা ব্যাপারটাই। আর সেই সুযোগে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের জমি দখল করে জাঁকিয়ে বসবাস করেছেন তিন বাংলাদেশি নাগরিক। এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে ফের বিষয়টি উল্লেখ করেন সুষেণবাবুর আইনজীবী দেবাশিস কর্মকার। বিষয়টি শোনার পর গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। আগামী সপ্তাহে ফের মামলার শুনানি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.