Advertisement
Advertisement

Breaking News

উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ, বন্ধ হয়ে গেল বাঁকুড়ার চণ্ডীদাস চিত্রমন্দির

বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই সিনেমা হলটি।

Bankura cinema hall inaugurated by Rabindranath Tagore closes
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:October 31, 2018 3:43 pm
  • Updated:October 31, 2018 3:43 pm

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: পথ চলা শুরু হয়েছিল বিশ্বকবির হাত ধরে। প্রায় আট দশক জুড়ে অগণিত দর্শকের মনোরঞ্জন করেছে। ব্যবসা দিনদিন কমে এলেও প্রজেক্টর কোনও মতে চালু রাখা হয়েছিল। কিন্তু মাল্টিপ্রেক্সের রমরমার সামনে আর টিকতে পারল না। এবার পাকাপাকিভাবেই বন্ধ হয়ে গেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে উদ্বোধন হওয়া বাঁকুড়া শহরের চণ্ডীদাস চিত্রমন্দির সিনেমা হল। অবসান হল একটি অধ্যায়ের। বাঁকুড়াবাসী হারালেন এক দুর্লভ স্মৃতিকে।

[ওয়েবসাইটে এখনও প্রাক্তন পুরপ্রধানের উজ্জ্বল উপস্থিতি! বিতর্কে বর্ধমান পুরসভা]

Advertisement

চণ্ডীদাস চিত্রমন্দির বন্ধের খবরে বাঁকুড়া শহর জুড়ে বিষাদের সুর। দর্শকের অভাবে প্রেক্ষাগৃহটি গত কয়েক বছর যাবৎ ধুঁকছিল। মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ হল বন্ধের নোটিস ঝুলিয়েছেন। পরিণামে তিনজন স্থায়ী ও দু’জন অস্থায়ী-সহ মোট পাঁচজন কর্মচারী রুজি-রুটি খোয়ালেন। বাঁকুড়া শহরে গত ক’বছরে একের পর এক সিনেমা হল ঝাঁপ ফেলেছে। চণ্ডীদাসের বিলুপ্তিও যে অবশ্যম্ভাবী, মানুষের তা টের পেতে দেরি হয়নি। কিন্তু জেনে যাওয়া ভবিতব্যকেও চোখের সামনে হাজির হতে দেখে অনেকেই আবেগ সামলাতে পারছেন না। “রবীন্দ্রনাথের নাম জড়িয়ে আছে! এমন একটা সম্পদ শহরের বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে গেল, ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।”– বলছেন প্রবীণরা। হল কর্তৃপক্ষের তরফে রাজু মুদির মন্তব্য, “বিগত কয়েক বছর ধরে দর্শক হচ্ছিল না। তবু চালাচ্ছিলাম। আর পারলাম না। বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম।”

Advertisement

১৯৪১ সালে চণ্ডীদাস চিত্রমন্দির নাম দিয়ে প্রেক্ষাগৃহের সূচনা। উদ্বোধন করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ইতিহাস বলছে, ভাস্কর রামকিংকর বেইজের আমন্ত্রণে বিশ্বকবি এসেছিলেন বাঁকুড়া শহরে। তদানীন্তন এডওয়ার্ড হলে (টাউন হল) একটি চিত্র প্রদর্শনী ও কবি সম্মেলন উপলক্ষে। উঠেছিলেন হিল হাউসে, যা কিনা অধুনা ডিএম বাংলো। তখনই চণ্ডীদাস চিত্রমন্দিরের উদ্বোধন করে যান তিনি। ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নিদর্শন হিসেবেও চণ্ডীদাস চিত্রমন্দির ভবন মানুষের চোখ জুড়িয়েছে।

নির্বাক ছবির যুগে জন্ম। ক্রমশ চণ্ডীদাসের কল্যাণে বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের শরিক হয়েছেন বাঁকুড়াবাসী। প্রেক্ষাগৃহটি বারবার দেখেছে হাউসফুল বোর্ড। দেখেছে উত্তমকুমার-সুচিত্রাকে নিয়ে ভক্তদের পাগলামি। হল বন্ধের খবর শুনে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়া প্রাচীন মানুষরা জানাচ্ছেন, কলকাতার গ্লোব, লাইটহাউস, নিউ এম্পায়ারের মতো ‘এলিট’ হলের সঙ্গে পাল্লা টানত বাঁকুড়ার চণ্ডীদাস চিত্রমন্দির। ইতালি থেকে প্রজেক্টর আনা হয়েছিল। পরে একটা সময় শুধু ইংরেজি সিনেমাই দেখানো হতো। সাউন্ড অফ মিউজিক, মাই ফেয়ার লেডি, গন উইথ দ্য উইন্ড, গডফাদার-এর মতো একের পর এক কালজয়ী হলিউডি সিনেমার ম্যাজিক আছড়ে পড়েছে চণ্ডীদাসের পর্দায়। মোহিত করেছে দর্শকদের। এসব এখন শুধুই ইতিহাস। বিষণ্ণ স্মৃতিমাত্র।

[ হাঁটতে বেরিয়ে ২২০ টাকায় চপ কিনে রসনাতৃপ্তি মুখ্যমন্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ