রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও সম্যক খান: প্রধানমন্ত্রীর সভায় দুর্ঘটনার জন্য পুলিশের ঘাড়েই দায় চাপিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে মৌখিক রিপোর্ট রাজ্য বিজেপির। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর অভিযোগ, প্রচুর মানুষ এসেছিল সভায়। এত ভিড় হবে তা ধারণা ছিল না দলের। সেই ভিড় সামলাতে পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করেনি। অভিযোগ, এসপিজির আইজি ঘটনার সময় এসপিকে ফোন করলে এসপি ফোন ধরেননি। দুর্ঘটনার পর যখন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তখন পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ বিজেপি নেতাদের। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে ফোনে কথা হয় দিলীপ ঘোষের। দিলীপ বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছেন শাহকে। তিনদিন ধরে বর্ষা ও ভিজে মাটি। আর প্রচুর মানুষ কাঠামোর উপর উঠে পড়েন। সে কারণেই নাকি ভেঙে পড়ে প্যান্ডেলের লোহার কাঠামো। সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, “এত মানুষ আসবে আমরা বুঝতে পারিনি।” ডেকরেটার্সের মালিককেও ডেকে পাঠাতে চলেছে তদন্তকারী কেন্দ্রীয় টিম।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুর্ঘটনাগ্রস্ত সভাস্থল সিল করে দিয়েছে পুলিশ। রাতভর সেখানে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল। সকাল থেকেও চলছে পাহারা। ভেঙে পড়া মণ্ডপে খুলতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ঠাঁই বসে আছেন ডেকরেটার্সের শ্রমিকরা। এরই মাঝে গত রাতেই রাজ্য সরকারের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক দল, সিআইডি টিম থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলও আসে ঘটনাস্থলে। পরিদর্শনে আসেন এডিজি আইবি সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া-সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তারা। ফরেনসিক দলের এক সদস্য চিত্রাক্ষ সরকার জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে কাঠামোয় অনেক গাফিলতি ধরা পড়েছে। বিশেষ করে লোহার কাঠামোর নিচের থেকে উপরের অংশ ভারী ছিল। যার ফলে প্যান্ডেল নড়বড়ে ছিলই। তার উপর তাতে মানুষ চড়ে ভিজে মাটি থেকে খুঁটিগুলো আলগা হয়ে যায়। শক্তপোক্ত কাঠামো ছিল না। মাটি থেকে চার ইঞ্চি গভীরে পোঁতা খুঁটি এত ভার নিতে পারেনি। ফরেনসিক দল নাট-বল্টুর নমুনা সংগ্রহ করেছে ঘটনাস্থল থেকে। বেশকিছু জিনিস মরচে ধরা ছিল বলে জানিয়েছে ফরেনসিক দল। সবমিলিয়ে, কাঠামোর গলদে ডেকরেটার্স সংস্থার উপরই দোষ যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ গতকালই ফোন করেন দিলীপ ঘোষকে। আহত বিজেপির কর্মীরা কেমন আছেন তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। মোট কতজন আহত সে সম্পর্কেও জানতে চান। আহত বিজেপির কর্মীদের উপর নজর রাখার নির্দেশ দেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহত বিজেপি কর্মীদের সমস্ত চিকিৎসার খরচ রাজ্য বিজেপি বহণ করবে বলে জানা গিয়েছে। কীভাবে প্যান্ডেল ভেঙে পড়ল সেই বিষয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি দলীয় তদন্ত কমিটি তৈরি করে দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রীর সভায় প্যান্ডেল ভেঙে আহত ২ জন বিজেপি কর্মীকে কলকাতার এনআরএস ও ১ জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ৩ জনকেই মেদনীপুর মেডিক্যল কলেজ হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.