সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শরীর থেকে সাতটি সুচ নির্বিঘ্নে বের করেছিলেন চিকিৎসকরা। ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছিল রোগী। তবু শেষরক্ষা হল না। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে শুক্রবার পিজি হাসপাতালে মারা গেল পুরুলিয়ার একরত্তি কন্যা। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, অপারেশনের পরও শিশুটির ফুসফুসের সমস্যা থেকে গিয়েছিল। সমাধানের চেষ্টা হয়। তারপরও বাঁচানো গেল না শিশুকন্যাকে। বাচ্চাটির ওপর পাশবিক অত্যাচারে অভিযুক্ত সনাতন ঠাকুরের এখনও খোঁজ পায়নি পুলিশ। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
ফুসফুসের সমস্যাই কাল হল। অপারেশনের পর খানিকটা সুস্থ হয়ে উঠলেও, বাঁচানো গেল না পুরুলিয়ার নির্যাতিতাকে। পুরুলিয়ার নাদিয়ারা গ্রামের ওই শিশুটিকে কয়েক দিন আগে ভর্তি করা হয়েছিল দেবেন মাহাতো হাসপাতালে। ঠান্ডা লেগে তার বুকে সংক্রমণ হয়েছিল। বুকের এক্স-রে করতে গিয়ে গিয়ে চমকে গিয়েছিলেন ডাক্তাররা। দেখা যায় শিশুটির শরীরে গেঁথে রয়েছে সাতটি সুচ। পুরুলিয়া থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। গত শনিবার শিশুটিকে পিজি হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসার ব্যাপারে উদ্যোগ নেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপারসন অনন্যা চক্রবর্তী। সাত সদস্যর মেডিকেল বোর্ড তৈরি হয়। শিশুটিকে রাখা হয় পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। মঙ্গলবার অপারেশন করে শিশুটির শরীর থেকে সুচগুলি বের করা হয়। সঙ্কট কাটে শিশুটির। সুচ বের হলেও, বাচ্চাটির ফুসফুসের সমস্যা কমেনি। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা এই বিষয়টি জোর দেন। ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তবুও শেষরক্ষা হল না। শুক্রবার ভোররাত ২.৪০ মিনিট নাগাদ তিন বছরের ওই শিশুকন্যা মারা যায়।
শিশুটির মা মঙ্গলা গোস্বামী স্বামী পরিত্যক্তা। স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সম্প্রতি সনাতন ঠাকুর নামে এক তান্ত্রিকের কাছে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। অভিযোগ, সনাতনই শিশুটির শরীরে সুচ ফুটিয়ে নারকীয় অত্যাচার চালায়। পুলিশের সন্দেহ এর পিছনে তন্ত্রসাধনার ভূমিকা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে সনাতন বেপাত্তা। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আগেই করা হয়েছিল। এবার তার বিরুদ্ধে আরও কঠিন ধারা প্রয়োগের সুপারিশ করেছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। শিশু সুরক্ষার স্বার্থে পুরুলিয়ার ওই বিকৃতকাম ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করেছে কমিশন। পকসো আইনে আরও কঠোর ধারা প্রয়োগের দাবি উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.