দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: গত শনিবার সন্তানকে হারিয়েছেন। এখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি পরিজনেরা। চোখের পাতা প্রায় সবসময়ই ভিজে। চোখের জল মুছে পুনর্নির্বাচনে অংশ নিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ফুলমালঞ্চের বাসিন্দা নিহত আনিসুর ওস্তাগারের পরিবার।
গত ৮ জুলাই, শনিবার ভোট (Bengal Panchayat Election 2023) চলাকালীন বাসন্তী থানার ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের ফুলমালঞ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০৩ ও ১১৩ নম্বর বুথের মধ্যে এবং বুথের সামনে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা ছুঁড়ছিল দুষ্কৃতীরা। সেই হামলার মুখে পড়ে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যান ভোটাররা। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় আনিসুর ওস্তাগারের। বছর বিয়াল্লিশের ওই তৃণমূল কর্মী পেশায় টোটোচালক। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কয়েকঘণ্টা পর আবারও শুরু হয় ভোটপর্ব।
বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে নির্বাচন কমিশন ১০৩ ও ১১৩ নম্বর বুথে পুনরায় নির্বাচন ঘোষণা করেন। সেই অশান্তির জেরে সোমবার পুনরায় ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হয়। ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাসের নেতৃত্বে পাঞ্জাব পুলিশ, বিএসএফ ও রাজ্য পুলিশের বিশাল বাহিনী এলাকায় টহল দেয়। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয় ১০৩ ও ১১৩ নম্বর বুথ চত্বর। সকালেই ভোট দিতে যান নিহত আনিসুর ওস্তাগারের পরিবার। ভোট দিতে যাওয়ার পথেও কান্নায় ভেঙে পড়েন আনিসুরের মা আনিশা ওস্তাগার।
তাঁর আক্ষেপ, “সেদিন যদি এত পুলিশ থাকত, তবে হয়তো এভাবে হারাতে হত না ছেলেকে।” তিনি বলেন, “কোনও পুলিশ ছিল না সেদিন। আমার ছেলেকে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুঁড়ে মেরে ফেলল। ভোট দেওয়ার মতো অবস্থায় আমি নেই। বউমা কারিমাই নিয়ে গিয়েছিল আমাকে। ছেলের খুনিদের যাতে কঠোর শাস্তি হয়, সেই জন্য ব্যালটে জবাব দিয়েছি।” নিহত আনিসুরের বউদি ১০৩ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী রোকেয়া ওস্তাগার। তিনিও কাঁদতে কাঁদতে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। আনিসুরের খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.