Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিপদ কাটাতে তুকতাক, এবার ‘কালাজাদু’র আশ্রয়ে বিমল গুরুং!

পাতলাবাসে মিলল কালাপুতুল ও পাঁঠার মাথা।

Bimal Gurung seeks shelter in 'occult' as 'Gorkhaland' bid failed
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 5, 2018 9:34 am
  • Updated:February 5, 2018 9:34 am

স্টাফ রিপোর্টার: কালা জাদু! পাতলেবাস তো বটেই, পাহাড় আচ্ছন্ন ছিল যাঁর মোহে সেই বিমল গুরুংকেই এবার নিতে হচ্ছে অতিলৌকিক শক্তির আশ্রয়। যজ্ঞ করিয়ে, তান্ত্রিককে দিয়ে তুকতাকের পর ইয়া বড় ‘তেরা মুহ কালা’ওয়ালা মূর্তি লাগানো হয়েছে বাড়ির গেটে।

[টাগের্ট বাংলার বৌধ্য গুম্ফা, মুর্শিদাবাদে ৮০ যুবক নিয়োগ জেএমবি’র]

Advertisement

বৃহস্পতিবারের বারবেলায় রোজ এক ঘণ্টার পুজো। হাতে আরও তিনটি আংটি। তার একটি দামি নীলা। ‘আপন প্রাণ বাঁচাতে’ বদলে গিয়েছেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। বদলে দিয়েছেন পাতলেবাসের নিজের বাড়িও। অন্দরমহল তো বটেই বহিরঙ্গেও বেশ কিছু পরিবর্তন চোখে পড়ছে যে। তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ তিন নেতা আপাতত সেই বাড়িটি দেখভালের দায়িত্বে। আন্দোলন চলাকালীন সিংমারি থেকে পাহাড়ি ঢাল বেয়ে দু কিলোমিটার দূরত্বে পাতলেবাসে মোর্চার দলীয় কার্যালয় তথা বিমল গুরুংয়ের খাসতালুকে পুলিশি হানায় উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, রিভলভার, তির-ধনুক, নগদ টাকা। পাশেই গুরুংয়ের বাড়ি। সেখানেও তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেগুলি সিল করে দেওয়া হয়। দলীয় সমর্থকরা পরে সেগুলির দরজা জোর করে খুললেও সেই সময় থেকেই গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন গুরুং, যিনি কিছুদিন আগে দিল্লিতে প্রকাশ্যে এলেন। কিন্তু তাঁর বাড়ির সমস্ত জিনিস কার্যত লুঠ হয়েছে। তিনি ঢুকতে পারছেন না। এই অবস্থায় নেপালের এক তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হন তিনি। যাঁর কাছে আগেও ‘বিপদে মোরে রক্ষা করো’ বলে ছুটে গিয়েছেন জিটিএ-র একদা চেয়ারম্যান। এবারও তাঁর কথাতেই এই কালাজাদু। এবং আঙুলে নতুন তিনটি আংটি।

Advertisement

কেমন এই কালাজাদু? কেনই বা এটা করাতে হল একদা পাহাড়ের একচ্ছত্র অধিপতিকে? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আর্থিক অনিয়মের বড় অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। একের পর এক হাঙ্গামা, পুলিশকে আক্রমণ, খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত হিসাবে অভিযুক্ত তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয়েছিল লুকআউট নোটস। স্ত্রী আশা গুরুং-সহ পরিবারের অন্যান্যদেরও নাম ওঠে পুলিশের খাতায়। এমনকী সম্পত্তি ক্রোকের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই অবস্থায় যখন দিল্লিতে বসে রাজ্য সরকারের কাছে সন্ধি প্রস্তাব পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি তখনই তান্ত্রিকের শরণ নেন তিনি। তাঁর নির্দেশেই হয় যজ্ঞ ও বাড়িতে কালা জাদুর নাকাবন্দি। যাতে অন্তত পাতলেবাসের সম্পত্তিটুকু কোনওক্রমে বাঁচিয়ে রাখা যায়। উল্লেখ্য, পাতলেবাসের দলীয় কার্যালয় তো বটেই গুরুংয়ের নিজের বাড়ির একাংশ ও তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রাস্টের স্কুল এখানকার একটি চা বাগানের জমি দখল করে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তা নিয়ে তদন্ত করছে জেলা ভূমি দপ্তর। ফলে এ নিয়েও যথেষ্ট বিপাকে রয়েছেন গুরুং। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পাহাড়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জিটিএ-র তরফে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় তোরণ বসানো হয়েছে।

[কাঁসাই নদীর চর থেকে উদ্ধার অস্ত্র, সিপিএম যোগ দেখছেন স্থানীয়রা]

এই অবস্থায় নেপালের ওই তান্ত্রিককে ফোন করেন গুরুংয়ের এক সহযোগী যুব নেতা। তাঁকে ডাকিয়ে আনা হয় এখানে। বিজনবাড়িতে হয় যজ্ঞ। কয়েকটি ছাগ বলি দেওয়া হয়েছে। যেগুলি কালো। তার একটির সিঁদুর মাখানো মাথা, কালো পোশাক পরিহিত মানুষের মূর্তি, তিনটি হাড় স্থাপন করা হয় পাতলেবাসের প্রায় পরিত্যক্ত বাড়ির গেটে। সেই মূর্তিতে চলছে ধুপ, ধুনো দিয়ে পুজো। আপাতত কয়েকদিন এই উপাচার পালনের নির্দেশ রয়েছে। এতেই নাকি বিপন্মুক্তি ঘটবে বিমল গুরুংয়ের, তেমনটাই দাবি ওই তান্ত্রিক তথা তাঁর ঘনিষ্ঠদের। তাঁদেরই একজন, যুব নেতা আনমোল থাপাকে ফোনে ধরা গেলে বলেন, “আমাদের সুপ্রিমোকে নানাভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। যখনই বিপদে পড়েছেন, ওই তান্ত্রিকের তুকতাক তাঁকে উদ্ধার করেছে। এবারও তাই তাঁর কথামতো চলা হয়েছে।” আপাতত তাই কালাজাদুতে আচ্ছন্ন পাতলেবাস এবং ‘আচ্ছে দিন’ দেখার অপেক্ষায় গুরুং।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ