নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘এই চানাচুরওয়ালা, এই কটকটি…’- দ্রব্য বা পণ্যের নামের ভিত্তি করে যাত্রীদের একাংশ হকারদের ডাকতে অভ্যস্ত। এতে যেন তাদের পেশার অপমান, তেমন পরিচয়েরও। তবে সেই ছবিটা এবার বদলাচ্ছে। ওঁদের গায়ে উঠছে ইউনিফর্ম। তার ফলে হকারদের যেমন আলাদা করা যাবে, তেমনই তাঁদের সম্পর্কে কোনও অভিযোগ উঠলেও সমাধান হবে। হকার বিধি চালু হল সিউড়ি সরকারি বাস ডিপোয়।
[রাজ্যে দুর্ঘটনা কমল তিন হাজার, ধীরে ধীরে কমেছে মৃত্যুর হারও]
সরকারি বাসে বা বাস ডিপোয় হকারি করতে গেলে বিধি মানতে হবে। বৈধ হকার হতে গেলে এখন থেকে গায়ে ঝোলাতে হবে ইউনিফর্ম। নীল কাপড়ের ওপর লাল হরফে বুকের কাছে হকার লেখা ইউনিফর্ম। হকার সংগঠনের সভাপতি শেখ শিবু বলেন, “দু’এক দিনের মধ্যে ছবি-সহ হকারদের পরিচয়পত্র বুকে ঝোলানো থাকবে। যা দেখে যাত্রী-সহ বাস কর্মীরাও নিশ্চিত হবেন। সরকারি বাসের অনুকরণে বেসরকারি ডিপোয় একই ইউনিফর্ম চালু করা হবে বলে জানান তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা রাজীবুল ইসলাম। কিন্তু কেন হকারদের চালু করতে হল এই পোশাকবিধি? কারণ হিসাবে জানা গিয়েছে, বাইরের হকার রুখতে এই সিদ্ধান্ত। যে কেউ হাতে কিছু নিয়ে উঠে যাচ্ছেন বাসে। এর সঙ্গে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও রয়েছে। তবে এই ইউনিফর্মের সঙ্গে হকারদের যেমন আয় বেড়েছে, তেমনই বাসযাত্রীরাও খুশি।
[সিনেমা নয়, খাস বাংলাতেই আমাজন অভিযানের স্বাদ সিকিয়াঝোরায়]
দেখতে অনেকটা অ্যাপ্রনের মতো। গলা থেকে ঝুলছে। বুকে লেখা হকার। সিউড়ি সরকারি বাস ডিপোয় গেলে এমনই হকার দেখা যাবে। হকারদের অভিজ্ঞতায় এটা করতে হয়েছে তাঁদের পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে। কারণ এখন সকাল থেকে এক পেটি জল অথবা কমলা লেবু হাতে বাসে উঠে পড়ছেন যে কেউ। যাঁরা বেশিরভাগই নেশার টাকা জোগাড় করতে বা অন্য কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে এই হকারির পথে নেমে পড়ছেন। রাজীবুল ইসলাম জানান, “যাত্রীরা অভিযোগ জানাচ্ছেন, হকারের বেশে এসে মোবাইল ফোন থেকে টাকা পয়সা চুরি করে পালাচ্ছে একদল তথাকথিত হকার। তাই সরকারি বাস ডিপোয় ঢুকলেই গলায় হকারের পরিচয়পত্র ঝোলাতে হবে।”
[ খোঁজ নেয় না অফিসার ছেলে, প্রশাসনের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন বৃদ্ধার ]
কোনও রাজনৈতিক রঙ না লাগলেও সরকারি বাস ডিপোর শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিয়েই বৈঠক করেছেন হকাররা। যাতে প্রাথমিক পর্বে সরকারি বাস ডিপোয় ২৮ জন হকারের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। ইউনিফর্ম ও পরিচয়পত্র লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে একগুচ্ছ বিধি বলবৎ করা হয়েছে হকারদের জন্য। যাতে ভিড় সরকারি বাসে কোনও হকার উঠতে পারবে না। একই রকমের জিনিস নিয়ে দু’জন হকার একই বাসে পারবেন না উঠতে। ইউনিফর্ম চালু করায় অন্য হকার যেমন আসছে না, বাসকর্মীরাও কাউকে বাসে উঠতে দিচ্ছেন না। ফলে আয় কিছুটা হলেও নিশ্চিত হয়েছে বলে মনে করছেন হকাররা।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.