সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের কুসংস্কারের বশে নৃশংস ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা গ্রাম। ডাইন অপবাদ দিয়ে এক আদিবাসী বৃদ্ধের উপরে নারকীয় অত্যাচার চালানোর অভিযোগ। অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সালিশি সভায় গ্রামের মোড়লের নিদান মেনে ওই বৃদ্ধের দু’হাতের দশ আঙুল কেটে নেওয়া হল। নিদান মাথা পেতে বাবার আঙুলে দায়ের কোপ দিল ছেলে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের পাঁড়ুইয়ের কসবা এলাকার রাধাকেষ্টপুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনার জেরে গোটা পরিবারটি আতঙ্কের সঙ্গে গ্রামে বাস করছে। পরিবারের সদস্যরা কেউ বাড়ির বাইরে বেরতে সাহস পাচ্ছেন না। যুবকের দু’হাতের দশ আঙুল কেটে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খবর পয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। জেলাশাসকের নির্দেশে স্থানীয় বিডিও ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণে গিয়েছেন। তাঁকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রামের পরিস্থিতি থমথমে থাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা গ্রাম টহল দিচ্ছে পুলিশ। এদিকে নিদান দিয়েই উধাও হয়েছে অভিযুক্ত মোড়ল। সেই সঙ্গে নৃশংস কাজে যুক্ত থাকা প্রত্যেক অভিযুক্তই পলাতক। একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
[সাগরে ফুঁসছে ‘তিতলি’, প্রমাদ গুনছে পুজোর বাংলা]
উল্লেখ্য, বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকায় আদিবাসী অধ্যুষিত মানুষের বসবাস। সেখানে ডাইন বা ডাইনি অপবাদ দিয়ে নারী ও পুরুষের উপরে অত্যাচারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রশাসনিক তরফে কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গড়তে বিবিধ উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যক্ষেত্রে যেকোনও সুফল দেখা যায় না, এই ঘটনাই তার উল্লেখযোগ্য প্রমাণ। তবে ওই গ্রামের মোড়ল কী কারণে এই ভয়ঙ্কর নিদান দিল তা খতিয়ে দেখছে স্থানীয় প্রশাসন। দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও ব্যবস্থা করা হবে বলে খবর। সেই সঙ্গে আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারটির নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করা হবে।