সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গি হামলায় গুলিতে শহিদ হয়েছেন জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। শনিবার নদিয়ার তেহট্টে তাঁর কফিনবন্দি মৃতদেহ আসে। চোখের জল, গান স্যালুটে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানানো হয়। সেদিন দূরদূরান্ত থেকে অগণিত সাধারণ মানুষ হাজির হয়েছিলেন সেখানে। সেই আবহেই নদিয়া জেলার বিজেপি নেতার একটি কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বলতে শোনা গিয়েছে, ” একটা ভোটও পাওয়া যাবে না।” আর এই ভাইরাল অডিও নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনায় বিজেপি নেতার উপর প্রবল ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত বিজেপি নেতা অর্জুন বিশ্বাসের পালটা দাবি, গোটা বিষয়টি সাজানো, ভিত্তিহীন। কথোপকথনটি প্রযুক্তি দিয়ে বানানো হয়েছে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যে হিন্দুত্ববাদের প্রচার করছে বঙ্গ বিজেপি, এমনই মত ওয়াকিবহাল মহলের। শহিদ জওয়ান ঝন্টু শেখকে নিয়েও ভোটের অঙ্ক কষছে বিজেপি! সেই চর্চাও শুরু হয়েছে এই পরিস্থিতিতে।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় মারা গিয়েছেন ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক। গত সপ্তাহে কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন জওয়ান ঝন্টু আলি শেখও। জঙ্গি হামলা ইস্যু নিয়ে পাকিস্তানের উপর ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছে মোদি সরকার। প্রত্যাঘাতের বার্তাও দেওয়া হয়েছে। সেই আবহতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর কটাক্ষ করা হচ্ছে এক শ্রেণির পক্ষ থেকে। দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন নদিয়ার বাসিন্দা বীর সেনা ঝন্টু আলি শেখ। তাঁর মৃত্যুতেও দেওয়া হল সাম্প্রদায়িকতার রঙ, ভোটের রাজনীতি?
শনিবার তাঁর শেষকৃত্যের সময় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, কংগ্রেসের নেতৃত্ব। সেই ঘটনার পর থেকেই একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। অডিও অনুয়ারে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক বিজেপির জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের সঙ্গে দলের এক কর্মীর কথোপকথন শোনা যায়। সেখানে ওই কর্মী, মৃত জওয়ানের বাড়ি যাওয়ার কথা বলেছিলেন। তার প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা জানান, “একজন মুসলিম মারা গিয়েছে।… ওখানে একটা ভোটও পাওয়া যাবে না।… এখন ভোটের রাজনীতি দেখতে হবে।” যদিও সেই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। এই বক্তব্য ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কীভাবে এই কথা তিনি বলতে পারেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
কৃষ্ণনগরের তৃণমূল মুখপাত্র দেবাশিস রায় তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “একজন জওয়ান দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। সেখানে কোনও জাতিভেদ, ভোটের রাজনীতি থাকতে পারে না। বিজেপি নেতাকে ধিক্কার। অবিলম্বে ওই বিজেপি নেতার জওয়ানের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।” যদিও ওই কথোপকথন তাঁর নয় বলে দাবি করেছেন অর্জুন বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “গোটা ঘটনাটি তৈরি করা। সাইবার থানায় বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও দায়ের করেছি।” শহিদ জওয়ানের বাড়িতে তিনি গিয়েছেন। ওই পরিবারের পাশেও তিনি আছেন। সে কথাও জানিয়েছেন বিতর্কিত এই বিজেপি নেতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.