সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঞ্জুতে মুখ পুড়েছে। ইশরাতের খবরও ভেসে গিয়েছে উড়ো হাওয়ায়। জটিলতা কাটিয়ে শেষমেশ দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি। সোমবার উলুবেড়িয়া উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অনুপম মল্লিকের নাম ঘোষণা করা হল। নোয়াপাড়ায় প্রার্থী হলেন সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা দিলীপ অনুগামী হিসেবেই পরিচিত।
[ ‘তৃণমূলের সঙ্গেই আছি’, বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন না জানিয়ে দিলেন মঞ্জু ]
দুই কেন্দ্রেই বিজেপির প্রার্থী নিয়ে চূড়ান্ত রাজনৈতিক নাটক চলেছে বিগত কয়েকদিন। উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ইশরাত জাহানের নাম শোনা গিয়েছিল। তিন তালাক বিরোধিতার এই মুখকেই নির্বাচনে নাকি তুরুপের তাস হিসেবে পেশ করতে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। সে খবর প্রচারিত হলেও আদতে তার সত্যতা মেলেনি। ইশরাত বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে তিনি দাঁড়াচ্ছেন না তা অচিরেই নিশ্চিত হয়ে যায়। অন্যদিকে নোয়াপাড়া কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে উঠে আসে মঞ্জু বসুর নাম। তৃণমূলের দীর্ঘদিনের সৈনিক মঞ্জু। রাজনৈতিক মহলের অন্দর খবর ছিল, এককালের চাণক্য মুকুলের কূটনৈতিক বুদ্ধিতে মঞ্জু গেরুয়া শিবিরে মাথা গলিয়েছেন। রবিবার দুপুরে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণাও করে দেয় বিজেপি। সন্ধে হতে না হতেই ভোলবদল। সাংবাদিক সম্মেলন করে মঞ্জু জানিয়ে দেন, তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন না। যাওয়ার প্রশ্নই নেই। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক ছিলেন, তাইই থাকবেন। এ ঘটনায় রীতিমতো মুখ পোড়ে বিজেপির, বলা ভাল মুকুল রায়ের। যে মুকুলের সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিল প্রশ্নাতীত, তাইই গেরুয়া রাজনীতিতে প্রথম পরীক্ষাতেই প্রশ্নের মুখে পড়ে। এরপরই সোমবার ড্যামেজ কন্ট্রোল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। আনুষ্ঠানিকভাবে দুই কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল বিজেপি।
[ আদিবাসীদের রেল ও সড়ক অবরোধ, সপ্তাহের প্রথম দিনে দুর্ভোগ ]
রাজ্য গেরুয়া রাজনীতিতে অনুপম মল্লিক দিলীপ ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। হাওড়া গ্রামীণের জেলা সভাপতি তিনি। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, উলুবেড়িয়াতে মুকুল রায় তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। ইশরাতের পাশাপাশি এক বলিউডি গায়কের নামও শোনা গিয়েছিল। তাঁরাও রাজি না হওয়ায় এক পুলিশকর্তার নামও ভেসে আসছিল। যদিও শেষমেশ কোনও সমীকরণই মিলল না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপের ঘনিষ্ঠ অনুপমই এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অন্যদিকে নোয়াপাড়াতেও মুকুলের পরাজয় হল। মঞ্জুকে দলে টানার ক্ষেত্রে তাঁরই ভূমিকা নাকি ছিল অগ্রণি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মঞ্জু যেভাবে উলটো পথে হাঁটলেন, তাতে মুকুল শিবির বড় ধাক্কা খেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ক্যাপ্টেন, কোচ বলে একে অপরকে স্বীকৃতি দিলেও, বিজেপির অন্দরে মুকুল ও দিলীপ চোরাটান চলছে। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তার জেরেই একেবারে শেষ মুহূর্তে প্রার্থী ঘোষণা কেন্দ্রীয় শাসকদলের। অনেকে মনে করছেন, নির্বাচনের আগে ঘরের কোঁদল এভাবে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের মানুষের কাছে ভাল বার্তা পৌঁছল না। দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা তো আর চাপা থাকল না। তা যে আখেরে তৃণমূলকে বাড়তি মাইলেজ দেবে এমনটাই বিশ্বাস রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
[ শীতে বেড়েই চলেছে সবজির দাম, বিপাকে মধ্যবিত্ত ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.