শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বিজেপি কাউন্সিলরকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ দের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত কাউন্সিলরের নাম কৃষ্ণদেব রায়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা কোথায় গেল? পুরসভায় এটাই জানতে চেয়েছিলেন বিজেপি কাউন্সিলর। অভিযোগ, তখনই তাঁকে মারধর করেন অরূপবাবু। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি সামাল দেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ সিংহ। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ি পুরসভায়।
[বিয়েবাড়িতে ছবি তোলা নিয়ে অশান্তি, স্ত্রী-শাশুড়ির মারে আত্মঘাতী যুবক]
তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত ধুপগুড়ি পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর কৃষ্ণদেব রায়। পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ দে। শনিবার পুরসভায় বৈঠক চলছিল। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল, প্রধানমন্ত্রীর হাউস ফর অল প্রকল্পের আওতায় যাঁরা পড়েন, তাঁরা সাহায্য পাচ্ছেন না। পুর এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি হচ্ছে। তবে যাঁরা প্রাপকের তালিকায় পড়েন তাঁদের জন্য নয়। এনিয়ে পুর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বারবার পুরসভায় জানিয়েও কোনওরকম সুরাহা হয়নি। অভিযোগটি কানে আসে পুরসভার বিরোধী দলের কাউন্সিলর কৃষ্ণবাবুর কানে। বিরোধীদের তরফে তিনি শনিবার বিষয়টি উত্থাপন করেন। জানতে চান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা কারা পাচ্ছেন। এমনকী, এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি হওয়া রাস্তা নিয়েও অভিযোগ জানান। তিনি অভিযোগ পেয়েছেন এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বরাদ্দ টাকা নিয়েও নয়ছয় হয়েছে। অভিযোগ, প্রসঙ্গ উত্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে মারতে তেড়ে আসেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ দে। গায়ে হাত দেন।
এর পরেই আক্রান্ত কাউন্সিলর জানান, ‘জনগণের প্রাপ্য টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। আমার কাছে খবর আছে। জনস্বার্থেই সেই খবর জানতে চেয়েছিলাম পুরসভায়। তারই প্রত্যুত্তরে আমার গায়ে হাত তোলা হল। আমাকে আটকে দেওয়া হল। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মারধরের অভিযোগ মানতে চাননি অরূপ দে। একই কথা বলেছেন ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ সিং। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই তরফের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়েছিল। হাতাহাতির পর্যায়ে যেতেই তিনি দুজনকে নিরস্ত করেন।
[মুক্তিপণের জন্য দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াকে ‘খুন’, গ্রেপ্তার ৩ বন্ধু]
জানা গিয়েছে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ দে বকলমে একটি নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদার। অভিযোগ, তাঁর ঠিকাদারি সংস্থাকে দিয়েই এলাকার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। সেই সুযোগে আর্থিক দুর্নীতির পাশাপাশি নির্মাণ কাজেও কম দামি জিনিসপত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই মারধরের বিষয়টি নিয়ে সরগরম ধুপগুড়ি পুরসভা। দলীয় কাউন্সিলরের গায়ে হাত তোলার জন্য ক্ষোভে ফুঁসছে জেলা বিজেপি নেতৃ্ত্ব।