রাজা দাস, বালুরঘাট: তৃণমূল-বিজেপি বিবাদে ফের উত্তপ্ত বালুরঘাট। ঘটনাস্থল ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। এবার তৃণমূল নেতাকে রাম দা দিয়ে কোপ মারার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। আক্রান্ত তৃণমূল নেতার নাম সঞ্জয় দাস। পাশাপাশি বেশ কিছু বিজেপি সমর্থকের বাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় বিজেপি। পালটা দাবি, তৃণমূল নেতা সঞ্জয় দাসের পারিবারিক বিবাদকে রাজনৈতিক রং চড়ানো হচ্ছে। ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। বালুরঘাট থানার ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটের সময় থেকেই তৃণমূল বিজেপির বিবাদ চলছে বলে খবর। সেখানকার বিজেপি সমর্থকদের ২০টি পরিবার এখনও ঘর ছাড়া। এরই মধ্যে রবিবার রাতে ফের দুই রাজনৈতিক দলের বিবাদে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। এবার ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতেরই ডাঙ্গি কালাইবাড়ি এলাকায় হল হামলা। হামলায় আক্রান্ত বিদায়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যার স্বামী তথা তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় দাস(৩৮)। তাঁর উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বিজেপি কর্মী সুজয় দাস-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। রাম দা দিয়ে সঞ্জয়বাবুর মাথায় কোপ দেওয়া হয়। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। মাথায় ১৩টি সেলাই পড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে বালুরঘাটের ভাতসালা ফতেপুর এলাকা থেকে মেলা দেখে ফিরছিলেন সঞ্জয় দাস। সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। অভিযোগ, সেই সময় বিজেপির কর্মী সমর্থকরা সঞ্জয় দাসের উপরে রাম দা নিয়ে হামলা চালায়। মাথায় কোপ দেওয়া হয়। আক্রান্ত সঞ্জয়বাবুর স্ত্রী জোৎস্না দাস ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কালাইবাড়ি সংসদের সদস্যা ছিলেন। এই সংসদে এবার বিজেপি প্রার্থী মীরা মণ্ডল জয়ী হয়েছেন। এরপরই হামলার ঘটনা ঘটল। রাতেই বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জয়ের পরিবার। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ। এদিকে তৃণমূল নেতার উপরে হামলার খবরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
চিকিৎসাধীন সঞ্জয় দাস জানান, রাতে তাঁর উপর হামলা চালায় বিজেপি কর্মী সুজয় দাস-সহ বেশ কয়েকজন। মাথায় কোপ মারা হয়।। দ্বিতীয়বার ফের হামলা করতে গেলে তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য একজন দা ধরে ফেলেন। প্রাণ বেঁচে গিয়েছে এই কারণেই। এলাকায় বিজেপি প্রার্থী জিতে যাওয়াতেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন সঞ্জয়বাবু। যদিও হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছে স্থানীয় বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার জানান, ভাই ভাই বিবাদ। সেই ঘটনায় রাজনৈতিক রং চড়ানো হচ্ছে। হামলার অজুহাতে বিজেপি কর্মীদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কর্মী সমর্থকরা বহুদিন থেকে ঘরছাড়া। পুলিশ উলটে তাঁদের কর্মীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এইসব ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা বুধবার জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন।
ছবি: রতন দে
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.