ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের গোষ্ঠী সংঘর্ষ তৃণমূলে। কার্যালয় দখলকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দলে উত্তাল বোলপুরের ইলামবাজার। দলের বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মুহূর্মুহূ বোমাবাজির জেরে আহত হয়েছেন পাঁচজন। দু’পক্ষের একে অপরের উপরে লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ইলামবাজার থানার পুলিশ। সোমবার সকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নববর্ষের রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ইলামবাজার থানার পাইকুনি গ্রামে।
জানা গিয়েছে, দলীয় কার্যালয় দখলকে কেন্দ্র করে প্রথমে সংঘর্ষে জড়ায় পাইকুনি গ্রামের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। পঞ্চায়েত ভোটের আগে কোন গোষ্ঠী গ্রামের দখল নেবে এই নিয়েই তরজা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। একটি গোষ্ঠীর নেতা শেখ নাজির, অন্য গোষ্ঠীর নেতা মহসিন। শেখ নাজির রবিবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে বসে টিভিতে আইপিএল দেখছিলেন। অভিযোগ, এই সময়ই শেখ মহসিন গোষ্ঠীর লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁর উপরে চড়াও হয়। নেতার উপরে হামলার ঘটনা ঘটছে দেখে বসে থাকেনি শেখ নাজিরের অনুগামীরা। লাঠি ও লোহার রড নিয়ে হামলাকারীদের উপরে চড়াও হয়। শুরু হয় বোমাবাজিও। এই বোমার আঘাতেই আহন হন তৃণমূল কর্মী হালিফ শেখ। তাঁর দেহের বিভিন্ন জায়গায় বোমার স্প্লিন্টার গেঁথে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রাতেই তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ইলামবাজার থানার পুলিশ। সকাল পর্যন্ত দুই তৃণমূল সমর্থককে গ্রেপ্তারও করেছে। সংঘর্ষের জেরে থমথমে হয়ে রয়েছে গোটা এলাকা। যদিও দলীয় সংঘর্ষ নিয়ে মুখ খোলেননি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃ্ত্ব।
এদিকে পঞ্চায়েত মামলার শুনানির ফলাফল কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগে গোটা রাজ্য। মামলার রায় শাসক না বিরোধী বিজেপির দিকে যাচ্ছে এখনও স্পষ্ট নয়। এমতাবস্থায় দলীয় কোন্দলের জেরে বোমাবাজির ঘটনায় তৃণমূলের মুখ পুড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এমনিতেই ভোটের আগে জেলার ১৩০টি পঞ্চায়তে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোটা ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বিরোধীরা। মনোনয়ন নিয়েও সংঘর্ষের অভিযোগ রয়েছে। তারপর নববর্ষের রাতে এহেন গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা তৃণমূলের অন্তর্কলহকে ফের সামনে নিয়ে এল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.