Advertisement
Advertisement

১০০ টাকা কিলো, তবুও এই বেগুন চাই মালদহবাসীর

কী এমন আছে নবাবগঞ্জের বেগুনে?

Brinjal crisis sky rocket in Maldah
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 4, 2018 2:09 pm
  • Updated:September 17, 2019 1:22 pm

বাবুল হক, মালদহ: এই বেগুনের যেমন স্বাদ, তেমনই তার আকার। আর তার সঙ্গে যদি থাকে নবাবিয়ানার ইতিহাস, তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু তা বলে কিলোপ্রতি দাম ১০০ টাকা! যদিও তাতেও কার্পণ্য নেই মালদহবাসীর। এতটুকু কমেনি নবাবগঞ্জের বেগুনের চাহিদা। অনেকেই দাম-দর করে কিছুটা কমিয়ে কিংবা মনে মনে গজগজ করতে করতে হলেও স্বাদ আর আকারের জন্যই চড়া দামে নবাবগঞ্জের বেগুন কিনে রসনাতৃপ্ত করছেন।

[জানেন আপনার প্রতিদিনের জীবনে কী প্রভাব ফেলে রসুন?]

Advertisement

mld brinjal (1)
কিন্তু এবছর এমন আকাশছোঁয়া দাম কেন?

Advertisement

চাষিরা এককথায় জানাচ্ছেন, এর কারণ বন্যা। প্রায় তিন মাস জমির উপর জমেছিল বন্যার জল। তাই অনেকেই এই নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ করতে পারেননি। ফলে চাহিদার তুলনায় জোগান কমেছে। অর্থনীতির সহজ নিয়মেই নবাবগঞ্জের বেগুন বিকোচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা!
মালদহের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এক সময় নবাবরা কৃষকদের দিয়ে তাঁদের জমিতে এই বেগুন চাষ করাতেন। সেই বেগুনের স্বাদ যেমন মিষ্টি ও সুস্বাদু, তেমনই আকারেও সাধারণ বেগুনের তুলনায় অনেকটা বড়। তাই এই বেগুনের গায়ে রয়েছে নবাবিয়ানার গরিমা। আর সেই নবাবি আমল থেকেই এই বেগুন নবাবগঞ্জের বেগুন নামেই পরিচিত। মালদহ জেলাজুড়েই এই বেগুনের বেশ কদর রয়েছে। হালকা সবুজ রঙ। দেখতে অনেকটা সাদাটে। জেলার বাসিন্দাদের হেঁশেলে যার চাহিদা থাকে সবসময়ই। কেজি প্রতি দাম ১০০ টাকা। তা-ও কিনছেন ভোজনরসিকরা। মালদহ শহরের মকদমপুর বাজারের এক সবজি বিক্রেতা নরেশ মণ্ডল বলেন, “এবার দ্বিগুণ দাম নবাবগঞ্জের বেগুনের। সুস্বাদু বলেই মানুষ কিনছেন। অন্যসময় ৩০-৪০ টাকা দরে এই বেগুন পাওয়া যায়। কয়েকমাস আগের বন্যার জন্য চাষিরা সেভাবে চাষ করার সুযোগ পাননি।”

[বেলডাঙায় শৌচাগার তৈরিতে জামাইয়ের পাশে দাঁড়ালেন শ্বশুর]

ইতিহাসের জেলা মালদহের প্রখ্যাত এই নবাবগঞ্জের ‘বড়’ বেগুনের ফলন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। চাহিদা বেশি, কিন্তু জোগান কম। তাই অগ্নিমূল্য। মালদহের উদ্যানপালন দফতরের উপ-অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রাজ্যের মধ্যে শুধুমাত্র মালদহ জেলাতেই নবাবগঞ্জ জাতের বেগুন চাষ হয়। এই জাতের বেগুনের বীজ বাজারে পাওয়া যায় না। চাষিরা নিজেদের উদ্যোগেই বীজ তৈরি করেন। পরের বছর ফের সেই বীজ আবার জমিতে রোপন করে নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ করেন। ২০১৭ সালের অাগস্ট মাসে উত্তর মালদহে বন্যা হয়েছিল। দীর্ঘ তিন-চার মাস ধরে জল জমি থেকে নামেনি। ফলে সেভাবে বেগুন চাষ করার সুযোগ পাননি চাষিরা।

জেলা উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার ১৬০ হেক্টর জমিতে নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ হয়। ওল্ড মালদহের নবাবগঞ্জ ছাড়াও ডাঙ্গাপাড়া, বেলাহার ও সাঞ্জাইল এলাকায় এই বেগুনের চাষ খুব বেশি হয়। এছাড়া রতুয়ার মহারাজপুর ও গাজোলের পাণ্ডুয়া ও বৈরগাছি অঞ্চলেও নবাবগঞ্জ জাতের বেগুন চাষ হয়ে থাকে। গাঙ্গেয় পলিমাটিতেই ফলন ভাল হয়। গত বছর জেলায় এই বেগুন উৎপাদন হয়েছিল ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। কিন্তু এই বছর ফলন হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে জমি থেকে বেগুন তোলার কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। রতুয়ার মহারাজপুরের চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, “বন্যার জন্য বেশি জমিতে চাষ করা সম্ভব হয়নি। ফলন খুব কম হয়েছে। লোকসান থেকে বাঁচতে আমরাই পাইকারি ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি।” অতএব দাম যাই হোক, নবাবিয়ানার স্বাদ পেতে হবে। তাই এযুগেও ১০০ টাকা কেজি হলেও কেউ হল্লা বাঁধাচ্ছেন না। ঝগড়া করলে বেগুন যে ফসকে যেতে পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ