BREAKING NEWS

২০ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  রবিবার ৪ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

হাত নেই তো কী! পায়ে পেন আঁকড়েই মাধ্যমিক, অসাধ্যসাধন বর্ধমানের জগন্নাথের

Published by: Kishore Ghosh |    Posted: March 1, 2023 7:47 pm|    Updated: March 1, 2023 7:47 pm

Burdwan's Jagannath Mandi is giving secondary exams by writing with feet | Sangbad Pratidin

অর্ক দে, বর্ধমান: হাত নেই তো কী! পায়ের দুই আঙুলের মাঝে পেন আঁকড়ে সাদা কাগজে অক্ষর ফুটিয়ে তুলছে সে। ছবি আঁকছে। ম্যাপ পয়েন্টিংও করছে। আবার জ্যামিতিক চিত্রও ফুটিয়ে তুলছে জগন্নাথ। যেন পুরীর মন্দিরের জগন্নাথদেবই ভর করেছে বাস্তবের জগন্নাথের উপরে! একে একে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে এবার ছাত্রজীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ‌্যমিক (Madhyamik) দিচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) মেমারির সিমলা গ্রামের জগন্নাথ মাণ্ডি।

জন্মের পর দিদিমা কোলে তুলে নিয়েছিলেন। হাত না থাকলেও জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার ‘মন্ত্র’ দিয়েছিলেন নাতির কানে! জগন্নাথদেবেরও তো দুই হাত নেই। কিন্তু অসীম শক্তির অধিকারী। তাই নাতির নাম সেই দেবতার নামেই রাখেন দিদিমা। বাস্তবিক হাত না থাকলেও অসীম মনের জোর জগন্নাথের। মনের জোরেই অতিক্রম করেছে সে কঠিন পথ। বাবা-মা অন্যত্র থাকেন। চরম অভাব-অনটনকে সঙ্গী করেই বড় হয়েছে। নাতির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়াই চালিয়েছেন দিদিমা মুগলি মাণ্ডি।

[আরও পড়ুন: নয়া চাল! নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়াতেই রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস ঘোষণা বিভাসের]

মেমারি-১ ব্লকের নুদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র জগন্নাথ। ছোট থেকেই পায়ে লিখে পড়াশোনা করে আসছে সে। বাগিলা পূর্ণ চন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দিরে মাধ্যমিকের সিট পড়েছে। পায়েই সাবলীলভাবে পরীক্ষায় উত্তর লিখেছে সে। ইতিহাসের দীর্ঘ প্রশ্নের উত্তর থেকে জীবন বিজ্ঞানের ছবি, অঙ্ক তথা জ্যামিতির ছবি, সবই পায়ে কলম-পেন্সিল ধরেই লিখেছে ও এঁকেছে সে। দুই চোখে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন তাঁর। জগন্নাথের কথায়, “ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। নিজে সফল হতে পারলে, চাকরি পেলে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারব। কারও বোঝা হয়ে থাকতে হবে না।”

[আরও পড়ুন: মনসা গানের আসর থেকে ফেরার সময় ‘গণধর্ষণ’! ভুট্টাখেত থেকে উদ্ধার মাদ্রাসার ছাত্রীর দেহ]

বাগিলা পূর্ণ চন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দির স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অনন্যা তরফদার বলেন, “জগন্নাথ মাণ্ডির লেখার ধরন খুব সুন্দর। প্রতিবন্ধকতা জয় করে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রছাত্রীরা জগন্নাথকে দেখে অনুপ্রাণিত হবে।” দিদিমা মুগলি মাণ্ডি জানান, জগন্নাথের বাবা শুধুমাত্র খাওয়ার খরচটা পাঠায়। নাতি বড় হয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক সেটাই চাইছেন। মুগলি বলেন, “ও নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যাক, আর কিছু চাই না।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে