পলাশ পাত্র, তেহট্ট: যাত্রী তোলার জন্য রেষারেষি। নিয়ম ভেঙে বাসের ছাদে ইচ্ছেমতো যাত্রী তোলা। জোড়া গাফিলতিতে শেষ হয়ে গেল আটটি প্রাণ। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন অন্তত পঞ্চাশ জন। মঙ্গলবার দুপুরে নদিয়ার তেহট্টর গলাকাটা এলাকায় এই ঘটনায় চালকের দিকে আঙুল উঠেছে।
কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কে যাত্রী তোলার জন্য বাস চালকদের মধ্যে রেষারেষির অভিযোগ নতুন নয়। ওভারটেকের পাশাপাশি যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতাও চলে চোখের সামনে। নিয়মের তোয়াক্কা করেন না চালক বা খালাসি। বাসের ছাদে তুলে দেওয়া হয় অনেককে। কোনও কোনও যাত্রী আবার বাসের ছাদে উঠতেই পছন্দ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে কৃষ্ণনগর-পাটকেবাড়ি রুটের একটি যাত্রীবোঝাই বাস তেহট্টর দিকে যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, খুব জোরে চালানোর জন্য বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। বৃষ্টির জন্য রাস্তার পাশে খালে জল ছিল। বাসটির একাংশ জলে ডুবে যায়। তেহট্ট শহরের পাঁচ কিলোমিটার আগে গলাকাটা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের আর্তনাদে এলাকার লোকজন যাত্রীদের বাস থেকে বের করার চেষ্টা করেন। ঘটনার কিছু পরে তেহট্ট থানার পুলিশ গিয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। বাসটিতে প্রায় ১০০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৮৩ জনকে প্রথমে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হতে থাকায় ৪১জন যাত্রী শক্তিনগর জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। তেহট্ট হাসপাতালে ২০ জন চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়। তবে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বাসটিতে বেশ কিছু স্কুলছাত্র ছিলেন। তবে কয়েকজন জখম হলেও কোনও পড়ুয়া মারা যায়নি। প্রাণহানি বাড়তে থাকার জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, বাসের ছাদে যাত্রী তোলা নিষিদ্ধ হলেও, নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এভাবে চলছে যাতায়াত। বাসটি জলে পড়ার জন্য কয়েক জন ডুবে মারা যান। দুর্ঘটনার জেরে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রুটে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.